নোয়াখালীতে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ছবি তোলা সেই যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান শরীফের বাড়ি থেকে পুলিশ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে গতকাল আরও ধর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ বেশ কয়েকজন ধর্ষক ও তাদের সহযোগীকে গ্রেফতারও করেছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

নোয়াখালী : নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার নোয়াখোলা গ্রামে কাতার প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর বিবস্ত্র করে ছবি তোলা নোয়াখলা  ইউনিয়ন (পশ্চিম) যুবলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান শরীফ ওরফে শরীফের বাড়ি থেকে পুলিশ ১টি বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি, ৫টি মোবাইল, ১টি ল্যাপটপ ও এক কার্টন কনডম উদ্ধার করেছে। গত বুধবার পুলিশ এ অভিযান চালায়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে একটি অস্ত্র মামলা করেছে। পুলিশ জানায়, দুপুরে ভিকটিম বাদী হয়ে চাটখিল থানায় মামলা করলে পুলিশ তাকে স্থানীয় ইয়াছিন হাজীর বাজার থেকে আটক করে। এরপর গতকাল তাকে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাঈদীন নাহীর আদালতে তোলা হয়। আদালত ধর্ষণ মামলায় তার ৩ দিন ও অস্ত্র মামলায় ১ দিনসহ দুই মামলায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। চাটখিল থানার তদন্ত কর্মকর্তা দুলাল মিয়া জানান, ধর্ষক শরীফের বিরুদ্ধে এর আগেরও কয়েকটি ধর্ষণ মামলাসহ ৭/৮টি মামলা রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী উত্তরপাড়ার গ্যাস লাইন এলাকায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে অভিযুক্ত বখাটে মো. নাসির (১৯), এনায়েত হোসেন (১৬), মো. উজ্জ্বল (১৫), আরিফুল ইসলামকে (১৬) পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় গতকাল সকালে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, বুধবার বিকাল ৩টায় সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলীর উত্তরপাড়ার গ্যাস লাইন এলাকায় ওই ছাত্রী খেলাধুলা করার সময় নাসির ও এনায়েত হোসেন তাকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে একটি ভবনের নিচ তলায় আটক করে ধর্ষণ করা হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত নাসিরসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রাজশাহী : রাজশাহী নগরীর খড়খড়ি এলাকায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেছে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোর। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসী ও চন্দ্রিমা থানা পুলিশ জানায়, চন্দ্রিমা থানার খড়খড়ি এলাকার একটি মহল্লায় বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় ওই কিশোরকে (১৬) আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে। চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুম মুনীর জানান, শিশুটি তার মাকে জানায়, ওই কিশোর তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। দুপুরের পর শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় গতকাল বিকালে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে বাঘা থানায় মামলা করেছেন। ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম রিবন আহম্মেদ বাপ্পি (২৮)। তিনি আড়ানী পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রিবন আহম্মেদ বাপ্পি ওই ছাত্রীকে (১৮) বিয়ের প্রলোভন দিয়ে গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে চকরপাড়া গ্রামে এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর থেকে ওই ছাত্রী বাপ্পিকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু বাপ্পি বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না। এরপর তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ছাত্রী অবশেষে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পি আড়ানী পৌরসভার চকসিংগা মহল্লার মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে।