সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

জাতীয় পার্টির জোটে অস্তিত্বহীন ৫৭ দল

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে গঠন করা হয় সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক জোট ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’। এ জোটের কেবল জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এবং বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ছিল। এর সঙ্গে ৩৫টি দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ইসলামী মহাজোট এবং ৩১ দলের সমন্বয়ে বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ) নিয়ে মোট ৬৮টি দল নিয়ে ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’ গঠন করা হয়। 

কিন্তু এ জোট গঠনের ১০ দিনের মধ্যে জোট ছেড়ে চলে যায় ১১টি দল। এরপর ৫৭ দলের সমন্বয়ে চলতে থাকে জাপার জোট। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ভোট করলে এ জোট অনেকটা বিলীন হয়ে পড়ে। জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে যে কটি আসন পায় তা থেকে ‘সম্মিলিত জাতীয় জোটে’র শরিকদের একটি আসনও তারা দেয়নি। ক্ষোভে ফেটে পড়ে সম্মিলিত জাতীয় জোটের শরিকরা। আর বর্তমানে এই জোটের কোনো অস্তিত্বই নেই। জানতে চাইলে পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সম্মিলিত জাতীয় জোট ছিল একটি নির্বাচনী জোট। গত জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এই জোট গঠন করেছিলেন পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর এই জোটের কার্যক্রম বর্তমানে নেই। পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আগামীতে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সরকার গঠনের লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে কাজ করে চলেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা আবারও বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।

ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান বলেন, জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের ওপর আমরা বিরক্ত। আমাদের সঙ্গে জোট করার পর কোনো আলোচনা না করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে তারা ভোট করল। এককভাবে ফায়দা লুটল। কথা ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করলে ৫টা আসন পেলেও আমাদের একটা ছাড় দেবে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমেদ জানান, কথা ছিল জাতীয় পার্টি আমাদের জোটগতভাবে ১০-১৫টি আসন দেবে। কিন্তু তারা কথা রাখেনি। একটি আসনও ছাড় দেয়নি। আমাদের আসন দিতে পারেনি এ নিয়ে কোনো কথা বলারও প্রয়োজন বোধ করেনি। তৎকালীন জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা আমাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদী আচরণ করেছেন। বর্তমানে এ জোট বিলুপ্ত। বাংলাদেশ জাতীয় জোট বিএনএর চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি জানান, জোটের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আমাদের ডাকে না। সেজন্য সম্মিলিত জাতীয় জোটের কোনো কার্যক্রম নেই। তবে বিএনএ জোট সক্রিয় আছে। জানা যায়, দলের সংখ্যার দিক থেকে এখন এটি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক জোট। এইচ এম এরশাদ ছিলেন জোটের চেয়ারম্যান আর শরিক দল ও জোটের মহাসচিবরা হবেন জোটের মুখপাত্র। আর জাপার সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ছিলেন প্রধান মুখপাত্র। পরবর্তীতে নির্বাচনের আগে মসিউর রহমান রাঙ্গা মহাসচিব হলে তিনি আর এই জোটকে গুরুত্ব দেননি। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আর বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ছাড়া যে দলগুলো জোটে রয়েছে সেগুলো প্যাডসর্বস্ব অনেক দল। দলগুলোর নেতারাও সেভাবে পরিচিত নন। অনেক দলের কার্যালয়ও নেই। জোটের নেতারাও সব দলের নাম বলতে পারেন না।

সর্বশেষ খবর