সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সরকারি-বেসরকারি অফিসে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’

মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাস্ক না পরলে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা পাওয়া যাবে না। এ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

বৈঠকে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’-এ একটি সংশোধন এনে একে আইনের খসড়া হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে এটি আইনে রূপান্তর হওয়ার পর অধ্যাদেশ থাকাকালে  নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে আইনি সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিসভা মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের আসন্ন বিশেষ অধিবেশনের জন্য রাষ্ট্রপতির ভাষণ অনুমোদন দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন প্রান্ত থেকে এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা অংশ নেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মাস্ক না পরলে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা পাওয়া যাবে না। এমন নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই বিষয়ে সব প্রতিষ্ঠানকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে। তিনি বলেন, বিভাগীয় কমিশনারদের ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছি। সব সরকারি-বেসরকারি অফিসের বাইরে বড় একটা পোস্টারের মতো থাকবে। মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে প্রচার করার জন্য বলা হয়েছে, দিনে দুবার নামাজের পর প্রচার করার জন্য যে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। আলেম-ওলামাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। ওনারাও এটা শুরু করেছেন। গণপরিবহনে মানুষ মাস্ক পরছে না, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সড়ক, নৌপরিবহন ও রেল সচিবের সঙ্গে শিগগিরই বসব। এ বিষয়ে কার্যকর কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেদিকেও মনোযোগ দিচ্ছি আমরা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয় বৈঠকে।

বাংলাদেশে এখন ৯৩টি কেন্দ্রে কভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫০টি বেসরকারি। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ২ হাজার চিকিৎসক এবং ৪ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়ায় কভিড-১৯ সামলানোর ক্ষেত্রে খুবই বড় অবলম্বন হিসেবে কাজ করেছে। এর বাইরেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২ হাজার ৬৫৪ জন টেকনেশিয়ান ও সহকারীকে নিয়োগ দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ৫ হাজার ১০০ চিকিৎসক এবং ১ হাজার ৭০০ নার্সকে আইইডিসিআরের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের ম্যানেজমেন্ট ও ইনফেকশন প্রিভেনশন কন্ট্রোল বিষয়ে ওরিয়েনটেশন দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে তারা মাঠপর্যায়ে করোনা মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছেন।

কভিড-১৯ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভ্যাকসিন সংগ্রহে উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোথা থেকে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পেতে পারি, সে বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ জারি আছে, আশা করি প্রথম দিকেই আমাদের ভ্যাকসিন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত তারিখে যেটা অধ্যাদেশ হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল সেটাই এবার আইনের খসড়া হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংসদ অধিবেশন চালু না থাকলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে যেসব অধ্যাদেশ প্রণয়ন হয় সেসব অধ্যাদেশ পরবর্তী সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিন উপস্থাপন করতে হয়। একটা ছোট্ট বিষয় যুক্ত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয় হয়তো খেয়াল করতে পারে নাই যে, এই অধ্যাদেশটা তো বাদ হয়ে যাবে, কিন্তু এই অধ্যাদেশ কার্যকর থাকাকালীন যেসব আইনি পদক্ষেপ বা কার্যক্রম হবে সেগুলোর হেফাজত দেওয়া হয়েছে। এটা সব ক্ষেত্রেই করতে হয়। মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আসা প্রস্তাবে সেটা ছিল না। আইনমন্ত্রী সেটা যুক্ত করে দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন, ২০০০ সংশোধন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান করে মন্ত্রিসভার গত বৈঠকে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এক দিন পর রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ আকারে তা জারি করেন।

সর্বশেষ খবর