হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে অনশন করেছেন সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদের মা সালমা বেগম। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দিনভর অনশন করেন তিনি। পরে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শরবত পান করিয়ে তাকে অনশন প্রত্যাহার করান। এদিকে, রায়হান হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাইদুর রহমান নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। এ ছাড়া পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আরও তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বন্দরবাজার ফাঁড়ির সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে। হত্যাকান্ডের ১৫ দিনেও বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িত সব পুলিশ সদস্য গ্রেফতার না হওয়ায় গতকাল সকাল ১১টায় আমরণ অনশনে বসেন রায়হানের মা সালমা বেগম। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির সামনে অনশনে বসার পর তাতে সংহতি প্রকাশ করে অনেকেই কর্মসূচিতে অংশ নেন। অনশনকে কেন্দ্র করে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় জড়ো হন হাজারো মানুষ। তাই ব্যস্ততম এ এলাকায় গতকাল সারা দিন দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অনশন চলাকালে রায়হানের মা সালমা বেগম জানান, তার ছেলে হত্যার ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ও পিবিআই। আকবর কোথায় আছে তাও বলতে পারছেন না কেউ। এ ছাড়া সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সব পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়নি। তার ছেলে কবরে পড়ে থাকলেও হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতরা মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মা হিসেবে এমন দৃশ্য তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি অনশনে বসেছেন। এদিকে, গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অনশনস্থলে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি রায়হানের মাকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এ সময় তিনি রায়হানের পরিবারকে ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। 

সন্ধিগ্ধ হিসেবে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী গ্রেফতার : সিলেট বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হান আহমদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী সাইদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গতকাল সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর মাহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইর অভিযোগকারী সাইদুর রহমানকে গতকাল সকাল ১১টার দিকে পিবিআই অফিসে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধিগ্ধ হিসেবে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।  তিনি বলেন, সাইদুর রহমানের দেওয়া খবরের ভিত্তিতেই রায়হানকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে।