বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় পেছাবে না পৌরসভা নির্বাচন

ইসিতে চলছে প্রস্তুতি

গোলাম রাব্বানী

আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে হচ্ছে পৌরসভা নির্বাচন। করোনা মহামারীর কারণে এ নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে নভেম্বর-ডিসেম্বরে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। ভোটগ্রহণ হবে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, একই দিনে দেশের দুই শতাধিকের বেশি পৌরসভায় ভোট করার চিন্তা করছে কমিশন। এক্ষেত্রে ভোট নিয়ে দুই ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি সচিবালয়। প্রথমত- নভেম্বরের মাঝামাঝিতে তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ ভোট করা; দ্বিতীয়ত- ডিসেম্বরের শেষে তফসিল দিয়ে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ভোট করার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে তফসিল থেকে ভোট অনুষ্ঠান পর্যন্ত ৩৫/৪৫ দিন হাতে রাখবে ইসি। পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে পরিষদের প্রথম সভার তারিখ, শপথ গ্রহণের তারিখ, পৌরসভার মেয়াদ শেষের তারিখ ও সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা এবং মামলা সংক্রান্ত তথ্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংগ্রহ করেছে ইসির সচিবালয়। সেই অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে কমিশনে।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বতর্মানে দেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি। নির্বাচন উপযোগী পৌরসভার সংখ্যা ২৯১টি। এর মধ্যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে ২৩৫ পৌরসভায় এবং এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন মেয়াদ শেষ হবে ৫৬ পৌরসভায়। সীমানা জটিলতা ও মামলাজনিত কারণে আপাতত নির্বাচন হচ্ছে না ৩৮ পৌরসভায়। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পৌরসভা আইন অনুযায়ী পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আগামী ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝির মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। আর মার্চের মধ্যে আরও কিছু পৌরসভার মেয়াদ শেষ হবে। সেই হিসাবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব পৌরসভায় ভোট করতে হবে। এজন্য আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে একই দিনে প্রায় দুই শতাধিক পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। এদিকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন। এ নির্বাচনে অধিকাংশ পৌরসভায় ইভিএম ব্যবহার করার প্রস্তুতি চলছে। তবে কিছু পৌরসভায় ব্যালট পেপারেও ভোটগ্রহণ করবে ইসি। পৌরসভা ভোটের বিষয়ে এর আগে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে পৌরসভা নির্বাচন পেছানো হবে না। নীতিগতভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। ভোট জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে। এর আগে-পরেও হতে পারে। তিনি বলেন, করোনার কারণে এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা কম। এইচএসসি পরীক্ষা হবে না। সবদিক বিবেচনা করে নির্বাচনের দিন তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এদিকে গতকাল নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, যথাসময়ে পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হবে। পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির মধ্যে করোনাভাইরাসের অজুহাতে ভোট না করতে অনেকের আবেদনের মধ্যে গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসি এমন তথ্য জানিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, সামনে পৌর ভোটের জন্য প্রস্তুতি গোছানোর মধ্যে অনেক জনপ্রতিনিধি করোনার কারণে ভোট না করার জন্য আবেদন, তদবির ও যোগাযোগ করছেন। সব বিবেচনা করেই যথাসময়ে পৌর নির্বাচনে ইসির পদক্ষেপ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, করোনাভাইরাসের মধ্যে ভোট নিয়ে অনীহা প্রকাশ করে বিভিন্ন পক্ষ থেকে অন্তত শ খানেক আবেদন জমা পড়েছে বলে ধারণা করছেন ইসি কর্মকর্তারা। গতকাল ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২১ সালের প্রথম দিকে অনেক পৌরসভার মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। এসব পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকার পৌরসভা আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। ‘করোনামহামারীর কারণে পৌরসভা নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী পৌরসভাগুলোর সাধারণ নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’ সর্বশেষ ২০১৫ সালে ২৪ নভেম্বর পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩৬ দিন সময় দিয়ে ভোটের তারিখ দেওয়া হয় ৩০ ডিসেম্বর। এক দিনে ভোট হয় ২৩৪টি পৌরসভায়। বাকিগুলোয় মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ বিবেচনায় পরে ভোট হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর