শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সম্ভাবনা আর অধিকার হারিয়েছিলাম পঁচাত্তরের পর : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্ভাবনা আর অধিকার হারিয়েছিলাম পঁচাত্তরের পর : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার যে স্বপ্ন, যে চেতনায় লাখো শহীদ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন, আমরা কেন অন্যের কাছে হাত পেতে, মাথা নিচু করে চলব। পঁচাত্তরের পর আমরা সেই সম্ভাবনা এবং অধিকার হারিয়ে ছিলাম।

গতকাল সকালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ সময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রতি বছর ২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকলেও এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। গতকাল এ পুরস্কার প্রদান করা হলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার লাখো মা-বোনের সেই আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেই আমরা এই বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা অন্যের সহায়তা না নিয়ে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আসন্ন শীতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের আগমনে সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়লেও তাঁর সরকার এটা মোকাবিলায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। যেন, দেশের মানুষ এর থেকে সুরক্ষা পায় এবং দেশের অর্থনীতির গতিশীলতা না হারায়। তিনি বলেন, আবার নতুনভাবে এর প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে ইউরোপে। ইউরোপে যখন আসে এর ধাক্কাটা আমাদের দেশেও আসে। আমরা এখন থেকে প্রস্তুত, আমরা এখন থেকেই তৈরি হচ্ছি। বিভিন্নভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালকে আমরা প্রস্তুত রাখছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যখন একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করলেন এবং ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদক্ষেপ নিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। এর সঙ্গে বাঙালি জাতিও তাদের সব সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলে।

পুরস্কার পেলেন যারা : মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত এ অনুষ্ঠান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরিচালনা করেন এবং পুরস্কার বিজয়ীদের জীবনবৃত্তান্ত পড়ে শোনান। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষে ডা. এ কে এম এ মুকতাদির অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। এ বছর সরকার দুজন মরণোত্তরসহ আট ব্যক্তি ও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, চিকিৎসাবিদ্যা, সংস্কৃতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০’ এ ভূষিত করে। এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ীরা হচ্ছেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, প্রয়াত কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ (মরণোত্তর), প্রয়াত বুদ্ধিজীবী মুহম্মদ আনোয়ার পাশা (মরণোত্তর) ও আজিজুর রহমান। চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুকতাদির। সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার। শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস। আজিজুর রহমান সম্প্রতি কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট সোনার একটি ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ পদক, সনদপত্র এবং পাঁচ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর