সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দুই ধাপে ভোটের চিন্তা

গোলাম রাব্বানী

দুই ধাপে ভোটের চিন্তা

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন দুই ধাপে করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে প্রথম ধাপে দুই শতাধিক এবং দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ১০০ পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠানের চিন্তা করছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই বেশ কিছু পৌরসভায় নির্বাচনকালীন সময় শুরু হয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝির মধ্যে আরও প্রায় দুই শতাধিক পৌরসভা নির্বাচন উপযোগী হবে। সেই হিসাবে নির্বাচন কমিশন চাইলেই চলতি মাসের মাঝামাঝিতে প্রথম ধাপের নির্বাচনের তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দুই শতাধিক পৌরসভায় ভোট করতে পারবে। আর দ্বিতীয় ধাপের তফসিল ডিসেম্বরের শেষ দিকে দিয়ে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ভোট করতে পারবে।

এ জন্য আজ পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে কবে নাগাদ পৌরসভার ভোটগ্রহণ হবে। আজ বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির ৭২তম সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় প্রধান এজেন্ডা রাখা হয়েছে পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়কে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। যদিও ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে পৌরসভা নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, একইদিনে দেশের দুই শতাধিকের বেশি পৌরসভায় ভোট করার চিন্তা করছে কমিশন। এক্ষেত্রে ভোট নিয়ে দুই ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি সচিবালয়। প্রথমত- চলতি নভেম্বরের মাঝামাঝিতে প্রথম ধাপের তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ ভোট করা; দ্বিতীয়ত- ডিসেম্বরের শেষে তফসিল দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ভোট করার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে তফসিল থেকে ভোট অনুষ্ঠান পর্যন্ত ৩৫/৪৫ দিন হাতে রাখবে ইসি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে পরিষদের প্রথম সভার তারিখ, শপথ গ্রহণের তারিখ, পৌরসভার মেয়াদ শেষের তারিখ ও সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা এবং মামলা সংক্রান্ত তথ্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংগ্রহ করেছে ইসির সচিবালয়। সেই অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে কমিশনে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বতর্মানে দেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি। নির্বাচন উপযোগী পৌরসভার সংখ্যা ২৯১টি। এর মধ্যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে ২৩৫ পৌরসভায় এবং এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন মেয়াদ শেষ হবে ৫৬ পৌরসভায়। সীমানা জটিলতা ও মামলাজনিত কারণে আপাতত নির্বাচন হচ্ছে না ৩৮ পৌরসভায়। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পৌরসভা আইন অনুযায়ী পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝির মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। আর মার্চের মধ্যে আরও কিছু পৌরসভার মেয়াদ শেষ হবে। সেই হিসাবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব পৌরসভায় ভোট করতে হবে। এদিকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন। এ নির্বাচনে অধিকাংশ পৌরসভায় ইভিএম ব্যবহার করার প্রস্তুতি চলছে। তবে কিছু পৌরসভায় ব্যালট পেপারেও ভোটগ্রহণ করবে ইসি। পৌরসভা ভোটের বিষয়ে এর আগে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে পৌরসভা নির্বাচন পেছানো হবে না। নীতিগতভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। ভোট জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে। এর আগে-পরেও হতে পারে। তিনি বলেন, করোনার কারণে এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা কম। এইচএসসি পরীক্ষা হবে না। সবদিক বিবেচনা করে নির্বাচনের দিন তারিখ নির্ধারণ করা হবে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ২৪ নভেম্বর পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩৬ দিন সময় দিয়ে ভোটের তারিখ দেওয়া হয় ৩০ ডিসেম্বর। এক দিনে ভোট হয় ২৩৪টি পৌরসভায়। বাকিগুলোয় মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ বিবেচনায় পরে ভোট হয়। ইসির সভায় ৬ এজেন্ডা : নির্বাচন কমিশনের ৭২তম সভায় পাঁচটি বিষয়ে এজেন্ডা রাখা হয়েছে। (ক) পৌরসভা সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি; (খ) স্থানীয় সরকার পরিষদসমূহের বিভিন্ন পদে নির্বাচন ও উপনির্বাচন; (গ) নির্বাচন কমিশনের ইন্টারনাল সাইটে নির্বাচনের বিষয়ে পেপার ক্লিপিং প্রকাশ সংক্রান্ত আলোচনা; (ঘ) তৃতীয় ‘জাতীয় ভোটার দিবস-২০২১’ উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা; (ঙ) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর সংশোধন এবং বাংলাকরণ বিল অনুমোদন এবং তা আইনমন্ত্রণালয়ে পাঠানো এবং (চ) বিবিধ বিষয় এজেন্ডায় রাখা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর