মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের আলটিমেটাম হেফাজতের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের আলটিমেটাম হেফাজতের

ফ্রান্সে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননার প্রতিবাদে গতকাল ঢাকায় হেফাজতের বিক্ষোভ -রোহেত রাজীব

ফ্রান্সে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অবমাননার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সমাবেশে সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা          জুনায়েদ বাবুনগরী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধ করার আলটিমেটাম দেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানান। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় ‘ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও’ কর্মসূচি শেষে এক সমাবেশে জুনায়েদ বাবুনগরী এসব কথা বলেন। পল্টন থেকে মিছিল নিয়ে  শান্তিনগর গেলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। পরে হেফাজত নেতারা সেখানে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বক্তব্য দেন জুনায়েদ বাবুনগরী। সেখানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে বলেন, বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে মুসলিম বিশ্বের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। যত দিন ক্ষমা চাইবে না, ততদিন পর্যন্ত ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত রাখতে হবে। তিনি অনতিবিলম্বে মহানবীকে অবমাননার প্রতিবাদে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান। হেফাজত মহাসচিব বলেন, সরকার আরও ১০০ বছর ক্ষমতায় থাকুক। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ করে ক্ষমতায় থাকতে হবে। সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। প্রশাসনের কথা রক্ষা করে এখানেই থেমে গেলাম। প্রয়োজনে আগামী কর্মসূচিতে এখানে থামব না। আমরা নবীর বন্ধু। হেফাজতে ইসলামের আরও দাবি আছে, সেগুলো পূরণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী মহানবী (সা.)-এর অবমাননার ঘটনায় সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ফ্রান্সে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননার প্রতিবাদে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ হয়েছে। অথচ সরকার নীরব। এই নীরবতার রহস্য কী, জনগণ জানতে চায়। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ফ্রান্সে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন এবং এর সমর্থনে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ‘কট্টর’ অবস্থানের প্রতিবাদে ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলাম। বেলা ১১টায় কর্মসূচি থাকলেও সকাল ৮টা থেকেই সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। ১১টার আগেই বায়তুল মোকাররমের উত্তর পাশের সড়কের পুরানা পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলা পর্যন্ত, পল্টন, মুক্তাঙ্গন, বিজয়নগর সড়ক নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বিজয়নগর, প্রেস ক্লাব থেকে পল্টন, গুলিস্তান সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। আশপাশের এলাকায় বিপুল পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। কর্মসূচির জন্য আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বরিশালে বিক্ষোভ সমাবেশ : নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল জানান, বরিশালে ওলামা-মাশায়েখ ও সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস, ফ্রান্সের পণ্য বর্জন এবং দেশের শিক্ষা পাঠ্যপুস্তকে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী রাখাসহ ৫ দফা দাবি জানানো হয়। গতকাল নগরীর সদর রোডে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাজার রোডের খাজা মঈনুদ্দিন মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আবদুল হাদীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহানগর ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা কাজী আ. মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামসুল আলম, মুফতি মাহমুদুর রহমান মাহবুব, মাওলানা আ. রব ও আবি আবদুল্লাহ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর