বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগকে সরানোর জন্য যত বেশি নাড়াচাড়া করবে তত বেশি পোক্ত হবে

জেলহত্যা দিবসের আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগকে সরানোর জন্য যত বেশি নাড়াচাড়া করবে তত বেশি পোক্ত হবে

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের অনেক চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমাদের সরানোর জন্য যত বেশি নাড়াচাড়া করবে আওয়ামী লীগের শিকড় তত বেশি মাটিতে শক্ত হবে, পোক্ত হবে।

জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে গতকাল বিকালে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন দলীয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে সভাটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। সভার শুরুতেই ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে যেভাবে বলতে চেষ্টা করুক না কেন, ক্ষমতায় জনগণের ভোট, জনগণের সমর্থন নিয়েই আমরা এসেছি। এটা হলো বাস্তব। যখন আমরা ২০০৮-এর পর সরকারে এসেছি তখন অনেকভাবে চেষ্টা করা হয়েছে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের। বিডিআরের ঘটনা ঘটানো হলো। হেফাজতের ঘটনা ঘটানো হলো। নানা ধরনের ঘটনা, বহু রকমের কারসাজি ঘটানোর চেষ্টা। ষড়যন্ত্র করে খুন করে ফেলা যায়, কিন্তু জনসমর্থন না থাকলে ক্ষমতায় গিয়ে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। মানুষের কল্যাণও করতে পারে না। এ হচ্ছে বাস্তবতা। আওয়ামী লীগ টিকে আছে শুধু জনগণের জন্য কাজ করার মধ্য দিয়ে। কারও দয়া ভিক্ষা করে নয়, কারও করুণা ভিক্ষা করে নয়। তিনি বলেন, তাই আওয়ামী লীগকে নিয়ে যত বেশি নাড়াচাড়া কিংবা ষড়যন্ত্র করা হবে, আওয়ামী লীগের জনসমর্থনের শিকড় আরও বেশি শক্তিশালী হবে, এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে। জনগণের সমর্থন নিয়েই প্রতিবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের মঙ্গলে ও কল্যাণে কাজ করেছে, যার শুভফলও জনগণ পাচ্ছে। এত অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যাকান্ডের পরও আওয়ামী লীগ টিকে আছে শুধু জনগণের সমর্থনেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি, কাজ করে যাব।

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী, খুনি ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বসে নেই। ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের ঘটনা ঘটিয়েও তারা ক্ষমতাকে ভোগ করতে পারেনি জনগণের কারণে। এটাই তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ। তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে গঠিত রাজনৈতিক দল কখনই দেশ ও জাতির কল্যাণ করতে পারে না। ক্ষমতাকে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ার কাজে ব্যবহার করে, জনগণ কিছু পায় না। আওয়ামী লীগই দেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল যেটি দেশের মাটি ও মানুষের মধ্য থেকে দেশের মাটিতে জন্ম নিয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশ উন্নতি হয়, দেশের মানুষের কল্যাণ হয়, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলতে পারে- আমরা তা প্রমাণ করেছি।

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে হয়তো ভুলে যান, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে শুধু ভোট চুরির অপরাধেই খালেদা জিয়াকে দেশের জনগণ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মাত্র দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগ করতে বাধ্য করিয়েছিল। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে দেশকে দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিল, বাংলা ভাই-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছিল। ’৯১ সালেও জামায়াতের হাত ধরে ক্ষমতায় এসেছিল খালেদা জিয়া। ভোট চুরির কারণেই দেশের জনগণ ’৯৬ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে ভোট দেয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের জন্য কাজ করে, দেশের উন্নতি হয়, দেশ এগিয়ে যায়, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। এটা আমরা প্রমাণ করেছি বলেই জনগণ বারবার নির্বাচনে আমাদের সমর্থন দিয়েছে। তিনি বলেন, দেশের একটি শ্রেণি আছে তাদের কাজই হচ্ছে সরকারের সমালোচনা করা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে জিয়া, এরশাদ এবং এরপর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছে। এদের মূল লক্ষ্যই ছিল দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, খুন ও সমাজে সংঘাত সৃষ্টি করা। এর মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, জিয়া-এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে নির্বাচন কেমন ছিল? ১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা- নির্বাচন ঠান্ডা। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ভোটে হারেনি, ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছিল। আর খালেদা জিয়া ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে তালিকা করেছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদের কারণেই দেশে ওয়ান-ইলেভেনের সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারও খালেদা জিয়ার হাতেই তৈরি। প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদকে খালেদা জিয়াই নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বানিয়েছিল। নয় সিনিয়র জেনারেলকে ডিঙিয়ে মইন উ আহমেদকে সেনাপ্রধানও করেছিল এই খালেদা জিয়া। এরা সবাই তার পছন্দের লোক ছিলেন। কিন্তু ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে নতুন দল গঠনের চেষ্টা করল। যাকে আমি গ্রামীণ মোবাইল ফোনের লাইসেন্স দিয়েছিলাম সেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস আর ডেইলি স্টারের সম্পাদককে নিয়ে নতুন দল গঠনের চেষ্টা করা হলেও জনগণ তাতে সমর্থন দেয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আরেকজন যিনি মারা গেছেন, তাকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না, তাকে দিয়েও কিংস পার্টি গঠনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেখানেও জনগণ কোনো সাড়া দেয়নি। ওই সরকার কিন্তু প্রথমেই আমাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সমর্থক, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ আন্তর্জাতিক চাপে ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। ওই সময়ের একটি শ্রেণির ধারণা ছিল কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না, কিন্তু দেশের জনগণ বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে। এরপর একটার পর একটা প্রতিটি নির্বাচনে জনগণের ভোট নিয়েই আমরা তাদের সেবা করে যাচ্ছি। যারা জনগণের কাছে ভোট চাইতে পারে না, যাদের তৃণমূলে সংগঠন নেই তাদের কেন জনগণ ভোট দেবে?

আক্ষেপ করে সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই বেসরকারি টেলিভিশনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে। কিন্তু এখানেই একেকজন একেক কথা বলেন। কিন্তু গণতান্ত্রিকভাবে তৃণমূল থেকেই আওয়ামী লীগ গড়ে উঠেছে, আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এ দেশের স্বাধীনতা এসেছে। আওয়ামী লীগের শিকড় তৃণমূলের অনেক গভীরে গ্রোথিত। এত হত্যাকান্ড, অত্যাচার-নির্যাতনের পরও আওয়ামী লীগ একদম তৃণমূল পর্যন্ত শক্তিশালী, জনগণের সমর্থনেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে তাদের কল্যাণে ও দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে। আর যদি শহীদের তালিকা দেখেন, দেশের জন্য একটি দল (আওয়ামী লীগের) হিসাবে এত জীবন অন্য কেউ দেয়নি। ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর হত্যাকান্ডের সঙ্গে খুনি মোশতাক ও জিয়াউর রহমান জড়িত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনি মোশতাক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেই প্রথমে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করে। এতেই স্পষ্ট হয়, এ ষড়যন্ত্রে খুনি মোশতাকের ডান হাত ছিল এই জিয়াউর রহমান। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সঙ্গে জিয়া জড়িত না থাকলে লন্ডনে টমাস উইলিয়াম এমপির নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটিকে বাংলাদেশে আসতে দেয়নি কেন? তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর খুনিকে প্রহসনের নির্বাচনে বিজয়ী করে সংসদে বসিয়েছিল। আর এরশাদও খুনি ফারুককে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করেছিলেন।

সমালোচকদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশে দুর্নীতির বিষবৃক্ষ রোপণ এবং অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে একটি এলিট শ্রেণি তৈরি করে ঋণখেলাপি সংস্কৃতি কারা সৃষ্টি করেছিল? দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে তারা দেশকে কী দিতে পেরেছে? এরা কি দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কিছু করেছে? খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ কিংবা মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছে? আসলে ক্ষমতায় থেকে এরা সন্ত্রাস, দুর্নীতি, হত্যা, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, যুবসমাজকে বিপথে চালিত, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ধবংস করতে পেরেছে। দেশ ও দেশের মানুষকে কিছুই দিতে পারেনি।

নিজেরা অর্থশালী, বিত্তশালী হয়েছে, জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করেনি, চায়ওনি।

শুধু পারিবারিক হত্যাকান্ড নয়, দেশ ও জাতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতেই ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে বেইমান মোশতাক রাষ্ট্রপতি আর জিয়াউর রহমান হচ্ছে সেনাপতি। তাদের পরিকল্পনায় এবং হুকুমে কারাগারের দরজা খুলে খুনিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়, তারাই হত্যাকান্ডটা চালায়। আর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর আমরা দেখেছি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের খেলা।

জেলহত্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৩ নভেম্বরের ঘটনা ঘটল। খুব স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে, সব সময় সূর্য ডোবার আগেই কারাগার লকআপ হয়। এরপর কেউ আর প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু সেদিন গভীর রাতে যখন কারাগারে এই ১৫ আগস্টের খুনিরা হাজির হলো প্রবেশ করার জন্য, তখন কারাগারের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল তারা সেখানে বাধা দিয়েছিল। কারণ তারা বলেছিল এভাবে কারাগারে প্রবেশ করা যায় না। সে সময় অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিফোন যায় যে তাদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হোক। কারণ তারা নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছে। কিন্তু সেই সঙ্গে তারা আবার অস্ত্র নিয়ে যাবে। সে কারণে তারা বাধা দিয়েছিল। কিন্তু বলা হলো, তারা যেভাবেই যেতে চায়, সেভাবেই যেন প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। এর পরই খুনিরা কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে একটি ঘরে নিয়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে গড়ে তুলেছিলেন। তখনই কিন্তু আঘাত আসে। কাজেই ১৫ আগস্টের ঘটনাকে যারা একসময় শুধু একটা পারিবারিক ঘটনা হিসেবে অপপ্রচার চালাতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্যটা ধরা পড়ে যায় ৩ নভেম্বর হত্যাকান্ডে। যেটা শুধু পারিবারিক হত্যাকান্ড ছিল না। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যারা মানতে পারেনি, স্বাধীন বাংলাদেশকে যারা স্বীকার করতে পারেনি, স্বাধীন বাংলাদেশটাই যারা চায়নি তাদের দোসররাই ছিল এ হত্যাকান্ডের মূল হোতা। এটা যে একটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চক্রান্ত, দেশের মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত- সেটাই প্রমাণ হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর একটাই লক্ষ্য ছিল- দেশের মানুষ স্বাধীন হবে, খেয়ে-পরে সুন্দরভাবে বাঁচবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর সারাবিশ্ব আমাদের যে একটা সম্মান ছিল আমরা বিজয়ী জাতি, সেটা ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর সেই সম্মানটাও আমরা হারাই। একটা খুনির জাতি হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিত হতে হয়। যে জাতিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তারা নিজের পায়ে দাঁড়াবে, মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে বিশ্বে চলবে। সেখানে সবার কাছে হাত পেতে এ দেশকে চলতে হতো। মানুষের করুণা ভিক্ষা করে, বিশ্বের কাছে দয়া-দাক্ষিণ্য নিয়ে চলতে হতো। তিনি বলেন, শুধু হত্যাকান্ডই নয়, একটা জাতিকে ও একটা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে, যারা সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করে, যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তাদের শুধু এটাই বলব যে, তারা কি ৩ নভেম্বরের ঘটনা একবার কোনো দিন ভেবে দেখেছেন? তারা কি এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত সেটা একবার চিন্তা করেছেন? জেলখানার মতো একটা সুরক্ষিত জায়গায় খুনিদের প্রবেশ করার অনুমতি কে দিয়েছিল? তাদের বিবেক তো সেখানে নাড়া দেয় না। তাদের বিবেক তো কথা বলে না। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যে নেতারা দিনরাত পরিশ্রম করে যুদ্ধ পরিচালনা করে দেশকে বিজয়ী করল, তাদের কারাগারের মধ্যে নির্মমভাব হত্যা করা হলো। আর জাতির পিতাকে তো সপরিবার, আমার ১০ বছরের শিশু ভাইটিকেও ছাড়েনি। যেন বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ বেঁচে না থাকে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর