বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্ব মিডিয়ায় শুধুই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরাক্রমশালী যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরেই মেতে আছে বিশ্ব মিডিয়া। বিশেষত গতকাল নির্বাচনের ভোট গ্রহণের আগে থেকে সব মিডিয়ার প্রধান শিরোনামেই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের খবর। ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি জো বাইডেন- কে হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তা নিয়ে প্রতি মুহূর্তের খবর ছিল এসব মিডিয়ায়। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেয়েছে বিশ্ব মিডিয়ার খবরে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যমগুলোর প্রস্তুতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বনামখ্যাত গণমাধ্যমগুলো নিজস্ব জরিপ প্রচার করেছে নির্বাচনের আগে। পরে গতকাল নির্বাচনের দিন প্রচার করেছে  বুথফেরত জরিপ। এ ছাড়া দিনভর লিখিত প্রতিবেদনের পাশাপাশি ছিল অডিও-ভিডিও খবর। গতকাল বিশ্ব গণমাধ্যমে নির্বাচনের খবরাখবরের মধ্যে ইরান, চীন ও রাশিয়া আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অভিযোগের বিষয়টি ছিল আগ্রহের কেন্দ্রে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ মনে করা হয় ইরান, রাশিয়া ও চীনকে। দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্ক একেবারেই ভালো যাচ্ছে না। ফলে এক দেশ অন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাবে তা-ই তো স্বাভাবিক। মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিবিএস বলছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা কে কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তেহরানের জন্য মোটেও গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং, নির্বাচনের পর হোয়াইট হাউস ইরানের সঙ্গে কেমন আচরণ করবে তা-ই মূলত দেখার বিষয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প বা জো বাইডেনের মধ্যে ইরান কাউকেই প্রাধান্য দিচ্ছে না উল্লেখ করে জাভেদ জারিফ বলেন, আমেরিকা যদি ইরানের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় তা হবে তেহরানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেক্ষেত্রে হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব কে পেল তাতে ইরানের কিছু যাবে আসবে না। ইরান তার পরমাণু সমঝোতা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আরেকবার আলোচনা করবে না বলেও পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, জো বাইডেন ভালো করেই জানেন, তিনি নির্বাচিত হলেও ইরান পরমাণু সমঝোতা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আরেকবার আলোচনায় বসবে না। জারিফ বলেন, ট্রাম্প হচ্ছেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি আমেরিকার নির্বাচনী ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ এবং এই ব্যবস্থার চরম অবমাননা করছেন। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে প্রার্থীই জয়ী হোন না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে ভুয়া তথ্য ব্যবহার অব্যাহত রাখবে রাশিয়া। আর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে মস্কোর প্রচেষ্টা আরও বেশি জোরালো হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তারা। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মর্যাদাহানির চেষ্টা করতে পারে রাশিয়া। মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের প্রচার শিবিরকে অবমূল্যায়নের চেষ্টা করছে মস্কো। বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, নির্বাচনে যেই জিতুক, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কের ভাঙন আর থামবে না। আবার চীনারাও বলছেন, ট্রাম্প বিজয়ী হলেই বরং তাদের জন্য ভালো। কারণ চীন নীতিতে বাইডেন ট্রাম্পের চেয়ে আরও বেশি কঠোর। ফলে তিনি জয় পেলে বেইজিং-ওয়াশিংটনের সম্পর্কের আরও অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর