শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সব ভোট গণনার দাবিতে র‌্যালি বিক্ষোভ গ্রেফতার

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

বোর্ড অব ইলেকশন অফিসে যথাসময়ে পাওয়া সব ব্যালটের গণনা দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ হলো নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, শিকাগো, ডেট্রয়েট, মিনিয়াপলিস, ওরেগন, ওয়াশিংটন ডিসিসহ বিভিন্ন স্থানে। বাইডেন সমর্থকরা এ কর্মসূচি গ্রহণ করেন ট্রাম্পের মধ্যযুগীয় আচরণের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে। জনগণের রায় উপেক্ষা করে গণতন্ত্রের নামে প্রহসনের নাটক করতে চাচ্ছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা তৃতীয় বিশ্বে ঘটে থাকে- এমন অভিমত পোষণ করেন ক্ষুব্ধ বক্তারা। সমাবেশ থেকে উল্লেখ করা হয়, নিশ্চিত পরাজয় জেনে ডাকযোগে আসা ব্যালট গণনা বন্ধের দাবিতে মামলার ঘটনাও ঘটেছে। হাস্যকর অভিযোগ দায়ের হয়েছে যে, গণনার সময় নাকি রিপাবলিকান পোলিং এজেন্টদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। মৃত ব্যক্তির নামে ডাকযোগে ব্যালট পাঠিয়েছেন বাইডেনের সমর্থকরা- এমন অভিযোগও করা হচ্ছে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে। ‘ডিফেন্ড ডেমোক্র্যাসি’, ‘প্রটেক্ট দ্য ভোট’ ও ‘রিফিউট ফ্যাসিজম’ ব্যানারে এসব কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষের সমাগম ঘটে। স্লোগান ছিল ‘সব ভোটের গণনা চাই’। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চললেও সন্ধ্যার পর নিউইয়র্ক সিটি এবং মিনিয়াপলিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সে সময় ট্রাম্পের সমর্থকরা আশপাশ থেকে চেষ্টা চালান উত্তেজনার, কিন্তু সবাই তা গভীর ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন। ট্রাম্পের সমর্থকরা বিক্ষোভের নামে হামলা করেন আরিজোনায় ভোট গণনার সেন্টারে। তবে নিরাপত্তারক্ষীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হন বলে বৃহস্পতিবার ভোররাতে জানা গেছে। এদিকে শনিবার পর্যন্ত ভোট গণনার দাবিতে এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে অন্তত ১০০ সিটিতে- এ তথ্য জানান আয়োজকরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে বর্ণবাদবিরোধী সমাবেশের কথাও ভাবছেন আয়োজকরা। ট্রাম্পের স্বৈরাচারী মনোভাবের চিরঅবসান ঘটাতে লাগাতার আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে বুধবার রাতে কমিউনিটি অর্গানাইজাররা উল্লেখ করেন। এদিন মিনিয়াপলিস ও ওরেগনে সহিংসতা ঠেকাতে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় বলেও জানা গেছে।

বিক্ষোভ, আটক : যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর পোর্টল্যান্ড থেকে ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে আতশবাজি, হাতুড়ি ও একটি রাইফেল উদ্ধার করেছে। পুলিশের দাবি, সেখানে দাঙ্গা বেধেছিল। ওরেগনের গভর্নর কেট ব্রাউন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রাতেই বিক্ষোভ দমাতে ন্যাশনাল গার্ডকে সক্রিয় করেন। নিউইয়র্কেও পুলিশ ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার বিকাল থেকেই শহরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। পুলিশ বলছে, বাইডেনপন্থী ও ট্রাম্প-সমর্থকরা পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ডেনভারে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানো চারজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডেনভারের পুলিশ বিভাগ। মিনেপোলিসের পুলিশও বলছে, রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করায় কয়েকজনকে আটক করেছে তারা। পোর্টল্যান্ড পুলিশের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, দাঙ্গার ঘোষণা দেওয়া সমাবেশ থেকে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে কেউ আহত হয়নি। বুধবার সকালে ১০০ জনের বেশি জড়ো হয়ে মিশিগানের ডেট্রয়েটে যেতে চেয়েছিলেন। তারা পুরোপুরি ভোট গণনার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা স্থানান্তরের দাবি জানান। ৩ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনের আগেই কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পোর্টল্যান্ডের ডাউনটাউন এলাকায় অনেক দিন ধরেই এ নিয়ে বিক্ষোভ হয়। অনেক সময় এসব বিক্ষোভ সংঘর্ষে রূপ নিতে দেখা যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর