জনগণকে জিম্মি করে সরকার দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভার আয়োজন করে তরিকুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর রাজধানীতে তৎকালীন এ্যাপোলো হাসপাতালে তিনি মারা যান। গতকাল যশোরে মরহুমের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, কুলখানিসহ দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে স্মরণ করেন দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম তিন, চার-পাঁচ গুণ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র সরকারের অসাধু ব্যবসায়ীদের লুটপাটের জন্য। তারা সিন্ডিকেট তৈরি করে সব মুনাফা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে। তিন-চার গুণ বেতন বাড়ানো হয়েছে। আর কৃষক ও শ্রমিক ভাইয়ের কী আয় বেড়েছে? ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের কী আয় বেড়েছে? করোনাতে তারা প্রায় নিঃস্ব অবস্থা হয়ে গেছে। বহু মানুষ আছে, যারা দুই বেলা দুমুঠো খেতে পায় না। সেই অবস্থা সরকারই তৈরি করেছে। এ মুহূর্তে সব দল-মতের মানুষের জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন, আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হই। নিজেরা পরস্পর পরস্পরকে বোঝার চেষ্টা করি। ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করি। সেই সঙ্গে সমস্ত মানুষ ও সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে যেন এক কাতারে আনতে পারি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রের আন্দোলনকে তীব্র থেকে তীব্রতর করতে হবে। এই দানব আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। তাহলেই তরিকুল ইসলামের আত্মার প্রতি পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রত্যেকদিন কথা বলেন। চমৎকার একটা ঘরের মধ্যে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে কথা বলেন। আমি শুনেছি, তিনি ছাত্র জীবনে নাটক করতেন। আমিও নাটক করেছি। তবে তার বক্তব্য, প্রতিপাদ্য একটাই, বিএনপির এই নাই, সেই নাই। এসব তিনি প্রতিনিয়ত বলছেন। বিএনপি নাকি চরম সংকটে পড়েছে। বিএনপিতে অন্ধকার। তাহলে মুখে সারাক্ষণ বিএনপি কেন? আপনার মুখে এত আলো কেন বিএনপির? কারণ, বিএনপি হচ্ছে একমাত্র দল যে রাজনৈতিক দলটি গণতন্ত্র আনতে পারে। অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে। সরকার নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, তার অবসান করতে পারে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, মশিউর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জয়ন্ত কুমার কুন্ড, অমলেন্দু দাস অপু, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।