সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অভিবাসনের ক্ষেত্রে লাভবান হতে পারি

শমসের মবিন চৌধুরী

অভিবাসনের ক্ষেত্রে লাভবান হতে পারি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ায় অভিবাসনের ক্ষেত্রে দেশটি কিছুটা নমনীয় হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের  সঙ্গে অভিবাসন নীতিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন কিছুটা নমনীয় হবে তা আগে থেকেই স্পষ্ট হয়েছে। সেটা যদি হয়, তাহলে আমাদের যারা সেখানে অভিবাসী আছেন, তারা কিছু সুযোগ-সুবিধা পাবেন। ভবিষ্যতেও আমরা এ ক্ষেত্রে লাভবান হতে পারি। তবে এখনই বলা যাবে না কতটুকু লাভবান হব। আগামী ফেব্রুয়ারির আগে কিছুই বলা যাবে না যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রনীতি বা অভিবাসন-নীতি কী হবে। এখনো অনেক ধাপ বাকি আছে।’

গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোলানাপে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক এই রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই একটি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পায়নি। এটা সামনেও পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এখন দেখতে হবে, নতুন প্রশাসনের মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, পররাষ্ট্রনীতি বা বাণিজ্যনীতি কী হয়। বিগত চার বছরে পুরনো মিত্রের সঙ্গে, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার সঙ্গে খুব খারাপ সম্পর্ক ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের। আমার মনে হয়, বাইডেন প্রশাসন শুরুতেই এ দিকটায় মনোযোগ দেবে। এরপর তিনি এশিয়া বা অন্যান্য দেশের দিকে দৃষ্টি দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘নতুন করে চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে অভিবাসন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে আমি মনে করি না যে এ ব্যাপারে তারা খুব একটা ভূমিকা পালন করতে পারবে। কারণ এখানে মূল ভূমিকা পালন করতে পারে চীন। মিয়ানমারেও ভোট হচ্ছে। সেখানে মনে হয় অং সান সু চির দল বিজয়ী হতে পারে। এতে রোহিঙ্গা সংকট খুব একটা কাটবে বলেও মনে হয় না। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের যে বৈরী সম্পর্ক বিগত চার বছরে ছিল, সেটি হয়তো থাকবে না। কিন্তু চীনকে যুক্তরাষ্ট্র এক নম্বর প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে। যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির চ্যালেঞ্জও মনে করা হয়। এ জন্য চীনের সঙ্গে আলোচনা করে সম্পর্কটা ওই পর্যায়ে যাবে না। তবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে তারা ভূমিকা পালন করতে পারে।’ বিএনপির সাবেক এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্কটা আরও জোরদার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি নীতিতে মূল ভূমিকা পালন করছে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। সেই অবস্থানেই যদি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন যায়, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থানটা কীভাবে দেখতে চায়, সে জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এদিকে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ কিছুটা সাংঘর্ষিক। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের এই দুই নীতির মধ্যেই আমরা চ্যালেঞ্জে আছি। আমি আশা করব, বাংলাদেশ সরকার আমাদের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে কাজ করবে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে পারস্পরিক লাভ ও সমমর্যাদা।’

সর্বশেষ খবর