সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রবাসীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় ও জো বাইডেনের জয়ের খবরে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। টাইমস স্কোয়ারে হাজারো জনতার উচ্ছল সমাবেশে জোরালো উপস্থিতি ছিল বাংলাদেশিদের। বিজয়ের উল্লাস প্রকাশে নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার, জ্যাকসন হাইটসসহ বিভিন্ন স্থানে আনন্দ-উল্লাস করে বাংলাদেশিরা। শনিবার সন্ধ্যায় নিজ এলাকা দেলওয়ার স্টেটে স্থাপিত নির্বাচনী প্রচারণা কমিটির অফিসের সামনে বিজয় সমাবেশে বাইডেন ও কমলা হ্যারিস বক্তব্য দেন। সেখানেও ছিলেন কয়েকশত প্রবাসী। ফিলাডেলফিয়া, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড থেকে বিজয়-সমাবেশে অংশ নেন প্রবাসীরা।

টাইমস স্কোয়ারে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূূলের সংগঠক খোরশেদ খন্দকার ব্যানারসহ মিছিলের নেতৃত্ব প্রদানের সময় বলেন, ‘এ বিজয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, অপশাসনকারীর পতনের। এ বিজয়ের ঢেউ ছড়িয়ে দিতে হবে আমেরিকার সীমানা পেড়িয়ে গোটাবিশ্বে। গত চার বছরে ট্রাম্পের আচরণে মিত্রহীন হয়ে পড়েছে আমেরিকা। বাইডেন-কমলার নেতৃত্বে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

যুুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আবদুল কাদের মিয়া বললেন, ট্রাম্পের পতনে গোটাবিশ্ব ভারমুক্ত হলো। অশুভ একটি শক্তির কবল থেকে রেহাই পেল। এ বিজয় ব্যক্তি বাইডেন অথবা কমলা হ্যারিসের নয়, এ বিজয় সভ্য সমাজের গোটা জনগোষ্ঠীর। একে সমুন্নত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

রিপাবলিকান পার্টির নেতা গিয়াস আহমেদ বাইডেন-কমলার বিজয়ের আনন্দে উল্লাস করে বললেন, ‘সামনের দিনে সব প্রবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ন্যায়ের শাসনের পক্ষে। আর মার্কিন প্রশাসনে নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করতে বাংলাদেশি হিসেবে নয়, মুসলমান হিসেবে জোট গড়তে হবে। কারণ, সারা আমেরিকায় কয়েক মিলিয়ন মুসলিম ভোটার রয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ হলে ভোটের ময়দানে গুরুত্ব বাড়বে। স্লোগান উঠাতে হবে এখন থেকেই ‘মুসলিম লাইভস ম্যাটার’। বিজয়ের উল্লাস প্রকাশে নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার এলাকায় ‘জাতীয় স্মৃতিসৌধ আর শহীদ মিনার অঙ্কিত বিশাল দেয়ালের সামনে শনিবার সন্ধ্যায় এক সমাবেশ হয়। এতে বাইডেন-কমলার নেতৃত্বে প্রবাসীরাও ঐক্যবদ্ধ স্লোগান ওঠে। সভাপতিত্ব করেন কমিউনিটি লিডার এবং সামনের বছর নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হতে আগ্রহী মোহাম্মদ এন মজুমদার। বিপুল করতালির মধ্যে মজুমদার বলেন, এ বিজয় গোটা অভিবাসী সমাজের। এ বিজয় খেটে খাওয়া মানুষের। এ বিজয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের।

যুবনেতা জামাল হোসেনের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন মঞ্জুর চৌধুরী, তোফায়েল চৌধুরী, সাঈদুর রহমান লিঙ্কন, জাকির চৌধুরী প্রমুখ। উল্লসিত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরাও ছিলেন সেখানে। জ্যাকসন হাইটস বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে মিষ্টি বিতরণ করা হয় বিজয়ের আনন্দে উদ্ভাসিতদের মধ্যে। সংগঠনের সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কামরুলের সঞ্চালনায় পালকি পার্টি সেন্টারের বিজয় সমাবেশে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই উত্থানকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন ফাহাদ সোলায়মান। লং আইল্যান্ডের ‘বাংলাদেশ-আমেরিকা প্রগেসিভ এলায়েন্স’র পক্ষে গোলাম ফারুক শাহীন বলেন, ঐতিহাসিক একটি বিজয়ের সাক্ষী হলাম বাঙালিরাও। কারণ, অনেকেই এবার বাইডেন-কমলা জোটের নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন। ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ এলায়েন্স’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘অভিবাসী সমাজে সৃষ্ট আতঙ্ক দূর হওয়ার পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে যে তামাশা শুরু হয়েছিল, ট্রাম্পের পতনে তা দূর হবে। সে প্রত্যাশায় মানুষ বিজয়ী করেছেন বাইডেন-কমলাকে।

সর্বশেষ খবর