মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

৩০ লাখ ভোট পেয়েও পরাজয় ড. নীনার

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

৩০ লাখ ভোট পেয়েও পরাজয় ড. নীনার

পেনসিলভেনিয়া স্টেটের ব্যালট বিপ্লবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয় পেয়েছেন বাইডেন আর কমলা। গত চার বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপশাসনে অতিষ্ঠ মানুষের মধ্যে জাগরণের এ ঢেউ সব ডেমোক্র্যাটকে ভিন্ন এক আমেজে ভাসিয়ে নিলেও পেনসিলভেনিয়া স্টেট অডিটর জেনারেল পদে জয় পাননি বাংলাদেশি আমেরিকান ড. নীনা আহমেদ। অথচ তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টিরই প্রার্থী ছিলেন এবং একই ব্যালটে থাকা স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল ও স্টেট ট্রেজারারেরও বিজয় এসেছে। কেন এমনটি ঘটল? এ নিয়ে বিদগ্ধজনেরা নানা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, নানা যুক্তির অবতারণা করছেন। ‘কেন জয়ী হতে পারেননি’- সে প্রশ্নে গত ৮ নভেম্বর ফিলাডেলফিয়া কমিউনিটির প্রিয়মানুষ, অভিবাসীদের অকৃত্রিম বন্ধু বিজ্ঞানী-রাজনীতিক ড. নীনা বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ড. নীনা বলেন, ‘আমি ছিলাম প্রথম অশ্বেতাঙ্গ, ইমিগ্র্যান্ট ও মহিলা। আমার নির্বাচনী তহবিল আরও বড় হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটি ঘটেনি। তহবিলের সংকটে ব্যাপক জনগোষ্ঠির কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপণ আরও বেশি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই স্টেটের ব্যালটে সবার নামের পাশে চিহ্নিত করার বিধান ছিল- সেটি আমরা এবং স্টেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সব ভোটারকে অবহিত করতে সক্ষম হয়নি। এ জন্য অনেকেই বাইডেনকে ভোটের পরই ভেবেছেন যে ডেমোক্র্যাটদের সবাই সেটা পাব। এ জন্য আমরাও কম দায়ী নই। ফিলাডেলফিয়া, বাক্স, মন্টগোমারি, চেষ্টার, ল্যানক্যাস্টার প্রভৃতি কাউন্টিতে ৭৫% ভোট হচ্ছে ডেমোক্র্যাট। আমরা এই ভোটব্যাংককেও সুসংহত রাখতে পারিনি ওই একই কারণে। আমি যেহেতু ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী ছিলাম, সেজন্য কমিউনিটির লোকজন ধরেই নিয়েছিলেন যে বাইডেনের সঙ্গে আমিও ভোট পাব। তবে স্টেটওয়াইড নির্বাচনে বাংলাদেশি এবং মুসলমান নারী প্রার্থী হয়েও ৩০ লাখের বেশি ভোট পেয়েছি। গণনা এখনো শেষ হয়নি। অপেক্ষায় আছি মোট ভোটের তথ্য জানতে। তবে আমার সঙ্গে যিনি লড়ে জয়ী হয়েছেন- রিপাবলিকান পার্টি থেকে তিনি পেয়েছেন ৩২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭৪ ভোট। ভুলে গেলে চলবে না যে এই স্টেটে আগে হিলারি ক্লিন্টন (২০১৬) এবং বারাক ওবামা (২০১২) যত ভোট পেয়েছিলেন, তার চেয়েও বেশি ভোট আমি পেয়েছি। ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভোট পেয়েছেন তারও বেশি পেয়েছি আমি।’ ড. নীনা আরও বলেন, ‘পেনসিলভেনিয়ার মতো বিরাট একটি স্টেটে আমার মতো একজন মুসলিম এবং নারী ইমিগ্র্যান্ট ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারটি খুব বড় একটি বিষয়। আরেকটি কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, আমার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডিফোর তিমুথি হচ্ছেন আফ্রিকান-আমেরিকান। ফলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অনেক আফ্রিকান ভোটারও হয়তো আমাকে গুরুত্ব না দিয়ে তার নিজ একজনকে ভোট দিয়েছেন।’ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. নীনা বলেন, ‘আমার ভোট গণনা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়নি। আমি নিশ্চিত হতে চাচ্ছি যে, কতভোট আমি পেলাম। আমি আমার কমিউনিটির বাইরের তরুণ সমাজ, নারী সমাজের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

 

সর্বশেষ খবর