মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের অনুসন্ধানে পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের ব্যাংক হিসাবে ১৪৮ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন ও পাচারের তথ্য পেয়ে এ মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, কমিশন গতকাল এই মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করবেন। মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুল, তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন ছাড়াও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকে আসামি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে গত ২২ জুলাই সেলিনা ও জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জনশক্তি রপ্তানিকারক পাপুলকে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মানব পাচার, অর্থ পাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাপুল নিজে এমপি হওয়ার পর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কোটায় পাওয়া সংরক্ষিত একটি আসনে তার স্ত্রী সেলিনাকে এমপি করে আনেন। প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন পাপুল, যেখানে তার বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে। কুয়েতে গ্রেফতার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্তে নামে দুদক। এর অংশ হিসেবে সেলিনাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তলব করা হয়। গত ২২ জুন ওই চারজনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক। পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পাশাপাশি পাপুল দেশে ফিরলে আর যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেয় দুদক।