শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

উন্নয়নের জন্য শান্তি বজায় রাখা একান্তভাবে দরকার : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

উন্নয়নের জন্য শান্তি বজায় রাখা  একান্তভাবে দরকার : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং মাদকের হাত থেকে সমাজকে রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, দেশের বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা একান্তভাবে দরকার। তিনি বলেন, দেশের মানুষের শক্তিকে আমাদের উন্নয়নের কাজে লাগাতে হবে।

গতকাল সকালে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের (ডিজিএফআই) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নবনির্মিত দুটি আবাসিক ভবন এবং একটি অফিসার্স মেস উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। খবর বাসস।

ডিজিএফআই’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ সাইফুল আলম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রতিরক্ষা সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং পিএমও সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া অন্যান্যের মধ্যে গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। প্রেস সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দেশকে জাতির পিতার কাক্সিক্ষত অবস্থানেই নিয়ে যেতে চায়, যেখানে দেশের প্রতিটি মানুষ পেট ভরে খাবে, হেসে-খেলে সুন্দরভাবে বাঁচবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস বা দুর্নীতি ও মাদকের হাত থেকে সমাজকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। এ জন্য আমাদের সবারই নিজ নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশটাকে গড়তে হবে। আমাদের প্রত্যেকের কিন্তু যার যার একটা দায়িত্ব রয়েছে। সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী একান্তভাবে অপরিহার্য,’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে বলেন, জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতিমালার আলোকেই তাঁর সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে কাজ করে যাচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিষ্ঠার সঙ্গে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের প্রতি, আপনারা মানুষের প্রতি কর্তব্য পালন করবেন, সেটাই আমাদের কামনা। তিনি বলেন, ইতিহাসকে জানতে হবে, দেশকে জানতে হবে, দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে, সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দেশের জন্য কাজ করার শিক্ষা নিজের বাবা, মায়ের কাছ থেকেই লাভ করেছেন, উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘এটা আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি, মায়ের কাছ থেকে শিখেছি। দেশের প্রতি যদি ভালোবাসা না থাকে, মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ না থাকে, কর্তব্যবোধ না থাকে তাহলে কোনো দায়িত্বই সঠিকভাবে পালন করা যায় না’, বলেন প্রেস সচিব।

প্রধানমন্ত্রী-প্যাট্রিক সাক্ষাৎ : বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুধাবন করে মানবতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের উন্নতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব কিছুর আগে মানবতাকে অগ্রাধিকার দিতেন এবং জনগণের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল সীমাহীন। আমি এখন যা করছি তা জাতির পিতার আদর্শের প্রতিচ্ছবি। ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স অব বাংলাদেশের (সিবিসিবি) সভাপতি প্যাট্রিক ডি’রোজারিওর নেতৃত্বে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল সকালে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর তিনি কুষ্ঠ রোগীদের ঘর করে দিয়ে তাদের পুনর্বাসিত করেছেন। তিনি বলেন, সমাজে অবহেলিত বেদে এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজনকে তিনি পুনর্বাসিত করছেন। প্রধানমন্ত্রী সমাজের বিত্তশালী শ্রেণিকে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। প্রেস সচিব বলেন, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা করোনাভাইরাস (কভিড-১৯)-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং এই পরিস্থিতিতে অসহায় ব্যক্তিদের বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায় সর্বদা তাঁর পাশে থাকবে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আরও বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উদারতার প্রশংসা ও মূল্যায়ন করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। এর অংশ হিসেবে তারা মোট সাত লাখ গাছ লাগাবে এবং ইতিমধ্যে সাড়ে তিন লাখ গাছ লাগানো হয়েছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, তারা টুঙ্গিপাড়া গিয়ে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। প্রেস সচিব বলেন, ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঢাকায় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত আর্চ বিশপ বিজয় ডি’ক্রুজ, কূটনীতিক কোরের ডিন এবং বাংলাদেশে ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচেরি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর