শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
নাইমুল আবরারের মৃত্যু

প্রথম আলো সম্পাদকসহ নয়জনের বিচার শুরু

আদালত প্রতিবেদক

কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরারের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এ ছাড়া প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৪ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছে আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।

অন্য আসামিরা হলেন- প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও শুভাশীষ প্রামাণিক, অনুষ্ঠানের বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার। অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত প্রথম আলো সম্পাদকসহ বিবাদীরা আদালতের কাছে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আদালতে প্রথম আলো সম্পাদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী ও প্রশান্ত কুমার কর্মকার। বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ওমর ফারুক। অভিযোগ গঠনের আদেশের ব্যাপারে প্রথম আলো সম্পাদকের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মতিউর রহমানসহ অপরাপর আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম। যেদিনকার ঘটনায় এই মামলা, সেদিন প্রথম আলো সম্পাদক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তাই আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম তিনি অব্যাহতি পাবেন। তিনি বলেন, অভিযোগ গঠনের এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে। শুনানির পর আসামিপক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলা যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, তা শুনানিতে তারা আদালতে তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেন, নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথমে মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়। ওই মামলা থাকা অবস্থায় ঘটনার পাঁচ দিন পর আদালতে আরেকটি নালিশি মামলা করা হয়। নালিশি মামলার আদেশে দেখা যায়, থানায় করা অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন না নিয়েই নালিশি মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয় আদালত, যা ফৌজদারি কার্যবিধি ২০৫-এর (ডি) ধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। নিম্ন আদালতের উচিত ছিল অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর নালিশি মামলাটি আমলে নেওয়ার। এ ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে নালিশি মামলা তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়। এহসানুল হক সমাজী বলেন, নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটি টর্ট আইনে বিচারযোগ্য। কোনোভাবেই ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়ে না। নালিশি মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষীর তালিকা একান্ত প্রয়োজন। অথচ এই মামলার আরজিতে কোনো সাক্ষীর তালিকা নেই। নালিশি মামলায় শুধু প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে আসামি করা হয়। অথচ সেদিন তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাকার রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে কিশোর আলোর বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান ছিল। সেদিন মাঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় নাইমুল আবরার। এ ঘটনায় নাইমুলের বাবা মজিবুর রহমান গত বছরের ৬ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে নালিশি মামলা করেন। এরপর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রথম আলো সম্পাদক, কিশোর আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর