শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ফরিদপুরে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৭২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরিদপুরের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই মো. ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ৭২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ সংস্থাটির উপপরিচালক আলী আকবর বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। দুদকের জনসংযোগ কার্যালয় বিষয়টি জানিয়েছে। বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আর রুবেল ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি। মামলায় সাজ্জাদ হোসেন বরকতের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৪৪ কোটি ৪৯ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩২ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে মোট ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ গোপন করেন তিনি। অন্য মামলায় ইমতিয়াজ হাসানের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে ২৮ কোটি ৩৫ লাখ ১০ হাজার ১৭০ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন এবং দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে মোট ১৭ কোটি ৯০ লাখ ৩ হাজার ১৪১ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা দুজনই দুদকে দাখিল করা সম্পদের হিসাব বিবরণীতে অর্থের উৎস ও খাতের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ দুই মামলায় ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লাবাড়ী সড়কে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলা হয়। ১৮ মে সুবল সাহা এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। ৭ জুন রাতে বরকত ও রুবেলকে ওই মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর আবেদনে ৯ অক্টোবর দুই ভাইয়ের ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেয় আদালত। ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ। মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলাসূত্রে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ ও মাদক ব্যবসা করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। ১৪ জুলাই এ মামলায় তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, হত্যা, চাঁদাবাজি, চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর