প্রায় দীর্ঘ এক বছর পর গত শনিবার ঘোষণা করা হয়েছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। ২০১ সদস্যের এই কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা)। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার পরই তাঁর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে অনেকেই নানা মন্তব্য করছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মৌসুমী তুমি কার?’ ফেসবুকে যে ছবিগুলো শেয়ার করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে সোফায় বসেন তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন মৌসুমী। আরেকটি ছবি আছে সেখানে দুজনই বসা। এতে লেখা রয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে মৌসুমী কবিতা, স্থান প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন (৬ শহীদ মাঈনুল রোড, ঢাকা সেনানিবাস’ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০২। দুটি ছবি নিয়েই ফেসবুকে নানাজন নানা রকম মন্তব্য করছেন।
যুবলীগের ঘোষিত কমিটিতে শুধু এই মৌসুমীই ‘মৌসুমী’ পাখি হয়ে যুবলীগে প্রবেশ করেননি, কমিটিতে বিএনপিসহ ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের পরিবার থেকেও হয়েছে পদায়ন। একঝাঁক সাবেক ছাত্রনেতা স্থান পেলেও পদায়নে মানা হয়নি সিনিয়র-জুনিয়র। আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলার শীর্ষ পদে আছেন, এমন লোকও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য থেকে শুরু করে ইসি ও সিসির সদস্য হয়েছেন। বাদ যায়নি নানা অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে বাদ পড়া বিতর্কিতরাও। এ ছাড়া স্বজনপ্রীতির অভিযোগও উঠেছে। আগের কমিটি যাদের মনোনীত করে তৎকালীন নেতৃত্ব বিতর্কিত হয়েছিলেন, সেই সব ‘মনোনীত’ নেতারাও কৌশলে এবার পদোন্নতি নিয়েছেন।
মৌসুমীকে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি নুরজাহান বেগম মুক্তা। তিনি তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তার ছবি এরশাদ সাহেবের সাথে দেখলাম। খালেদা জিয়ার সাথেও দেখলাম। এমনকি আমাদের নেত্রীর পেছনেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। এই নারী তো সুবিধাবাদী। এরা খুবই বিপজ্জনক। এরা আমাদের নেত্রী পর্যন্ত আসে কাদের হাত ধরে??? আসুন এদের চিহ্নিত করি।’ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জেসমিন শামীমা নিঝুম লিখেছেন, ‘পাকিস্তানি প্রেতাত্মা জামাত-শিবির-বিএনপির শিকড় বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী রাজনীতির কতটা গভীরে প্রবেশ করেছে তার প্রমাণ এটা। এত যাচাই-বাছাইয়ের পরও এরা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করছে। আমার মনে হয় হাইকমান্ড এ ব্যাপারে অবগত নয়। আশা করি ঘটনা সত্য হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যতটুকু জেনেছি, মৌসুমী ফাতেমার বড় ভাই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা যুবদলের সেক্রেটারি। ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা যুবলীগের নির্বাহী সদস্য।’
এমবি কানিজ নামের একজন খালেদা জিয়ার সঙ্গে মৌসুমীর তিনটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘এই নেন দুই কেন্দ্রীয় যুবলীগের ত্যাগী ট্যাগী সদস্য! কেন রে ভাই দলে ত্যাগী নেতা নেত্রীর অভাব! কত কতজন গতকাল প্রকাশিত কমিটিতে একটা সদস্যপদ পায়নি বলে বুকের তীব্র ব্যথা রক্তক্ষরণে ঘুমাতে পারেনি! তাদের পরিবারসহ এই তীব্র দহন হজম করে নেত্রীর পানে চেয়ে সব ব্যথা লাঘব করে আর তোমরা এসব কাউয়া পক্ষী রূপ বদলানো, দল বদলানো চরিত্রের লোকদের এত বড় ঐতিহ্যবাহী সংগঠনে ঢুকিয়ে নীলা নিজের ঘাম জরানো রক্ত জরানো নেতা-কর্মীকে বাঁশ দেওয়ার জন্য??? বুঝবা তোমরাও ...’