মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
ফোনালাপ শুনিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী

করোনার দুঃসময়ে ফায়দা লুটতে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার দুঃসময়ে ফায়দা লুটতে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি

নিজেদের অপকর্মের কারণে বিএনপি মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়ার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তারা কষ্টে আছেন। এই সুযোগে বিএনপি চাচ্ছে- মানুষের দুঃসময়টাকে কাজে লাগিয়ে সরকারের বদনাম করতে। নিজেরা ফায়দা লুটতে। তবে মানুষ এখন অন্ধ নয়। তারা সব দেখে-জানে।

গতকাল জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপির হারুনুর রশীদ রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়ার প্রসঙ্গটি নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। তিনি ওই ঘটনার সংসদীয় তদন্ত দাবি করেন। পরে শেখ হাসিনা বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের বক্তব্যের জবাব  দেন। তাকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উনাকে সামনের সিটে বসিয়েছি। উনি কথা বলেন। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে এমন এমন কথাগুলো  তোলেন, সব সময় তার উত্তরও দিই না। আজকে যেভাবে কথাটা তুললেন, বোধহয় নিজেদের পার্টির সম্পর্কে তথ্যগুলো জেনে নিয়ে কথা বলা উচিত ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির সংসদ সদস্য নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তারা আদৌ নির্বাচন করেন কিনা? নির্বাচনে উনারা অংশ  নেন। নমিনেশন নিচ্ছেন, যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনে কোথাও একটা এজেন্টও ঠিকমতো দেবেন না। কোনো কিছু করবেন না। একটা সময় পর নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করেই বলে নির্বাচন ঠিক হচ্ছে না। নির্বাচন যদি করতে হয়, সঠিকভাবে যেন করেন। আমরাও রাজনীতি করে আসছি। আমরা মানুষ চিনি।

বিএনপি অনেক আগেই জনগণের সমর্থন হারিয়েছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারপর  থেকে তাদের অপকর্মের কারণে মানুষের কাছ থেকে আরও দূরে সরে  গেছে। এটা হলো বাস্তবতা। ২০০১ সালে চক্রান্ত করে ক্ষমতায় আসার পর  থেকে তারা যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে, সন্ত্রাস-খুন-নারী নির্যাতন থেকে শুরু করে এমন কোনো অপরাধ নেই যে, তারা করেনি। তারপর এলো তাদের অগ্নিসন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। মানুষ  পোড়ানো, খুন করা তাদের আন্দোলন।

ঢাকার নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, একটি সিটে নির্বাচন হচ্ছে, পট করে কয়েকটা বাসে আগুন দেওয়া। তারা নিজেরা আগুন দিয়ে দোষ দিচ্ছে এটা নাকি সরকারি এজেন্ট। আমরা আগুন দেব কী কারণে? আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা আগুন দিয়ে আমাদের সরকারকে বদনামের ভাগীদার করব কেন? মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া তো আমাদের দায়িত্ব। টেকনোলজির কারণে হাতে হাতে ধরা পড়ে যাচ্ছে কারা আগুন দিচ্ছে। নিজেরা আগুন-টাগুন দিয়ে পার্লামেন্টে এসে সরকারকে দোষারোপ করা হলো। উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে চাপানো, এটা তাদের অভ্যাস। বিএনপির এমপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সংসদ একটি পবিত্র জায়গা। বিএনপির সদস্যকে বলব, এভাবে এখানে অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত না করাই ভালো। এটা মানুষ বিশ্বাস করবে না। আর সন্ত্রাসী কর্মকা-টা যেন বিএনপি বন্ধ করে। এটাই আমার আবেদন থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তারা কষ্টে আছেন। তাদের সাহায্য করে যেতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, অর্থনীতির চাকাটা সচল রাখতে। আর সেখানে তারা এই সুযোগে চাচ্ছে- মানুষের দুঃসময়টাকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে বদনাম করা। আর নিজেদের ফায়দা লোটা। এই ফায়দাটা লুটতে পারবে কিনা জানি না। কারণ, মানুষ এখন অন্ধ নয়। তারা সব দেখে-জানে। এ বিষয়টি বিএনপি নেতাদের বোঝা উচিত। বক্তব্য দেওয়ার আগে শেখ হাসিনা বাসে আগুন দেওয়া ইস্যুতে বিএনপি নেতা নিতাই রায় চৌধুরী ও দলের একজন নারী নেত্রীর টেলিফোনের কথোপকথনের অডিও সংসদে বাজিয়ে শোনান।

সর্বশেষ খবর