বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ফাইজারের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর

চীনের করোনাভ্যাক নিরাপদ ও দ্রুত রোগ প্রতিরোধে সক্ষম

প্রতিদিন ডেস্ক

ফাইজারের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর

করোনার একটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেক। সম্প্রতি তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলের বরাতে ৯০ শতাংশ কার্যকর বলে জানানো হলেও বিস্তারিত ফলে দেখা যাচ্ছে ওই ভ্যাকসিন ৬৫ বছরের  বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ কার্যকর।

বার্তা সংস্থা এপি ও রয়টার্স এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে ফাইজারের ভ্যাকসিনটি ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকরের কথা জানানো হলেও বিবিসির প্রতিবেদনে অবশ্য ৯৪ শতাংশ কার্যকরের কথা জানানো হয়েছে। গতকাল কোম্পানি দুটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার আরও বিস্তারিত ফলাফল আসতে শুরু করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এই ভ্যাকসিন সব বয়স, বর্ণ ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সমানভাবে কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনটির জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেতে শিগগিরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছে আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছে এর উদ্ভাবক দুই  কোম্পানি।

বিশ্বজুড়ে ৪১ হাজারের বেশি মানুষের দেহে দুটি ডোজ পুশ করার পর প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটির এমন কার্যকারিতার কথা জানাল ফাইজার ও বায়োএনটেক। এর আগে প্রাথমিক ফলাফলে ৯০ শতাংশ কার্যকর হিসেবে প্রমাণ পাওয়ার ঘোষণার দিন কোম্পানি এর  কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে জানিয়েছিল। করোনার ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে থাকা আরেক মার্কিন  কোম্পানি তাদের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়ার  ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় এ ঘোষণা এলো। বিশ্বজুড়ে করোনার যেসব ভ্যাকসিন গবেষণার তৃতীয় ধাপে রয়েছে এর মধ্যে দুটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার কথা জানা গেল। জরুরি অনুমোদন পাওয়া মার্কিন স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রথমে ভ্যাকসিনটি পাবেন। এর অন্তত এক মাস পর জাতীয় পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে পারে। দুটি ভ্যাকসিনই তৈরি করা হয়েছে মেসেঞ্জার আরএনএ নামক একটি নতুন জৈব-প্রযুক্তির মাধ্যমে। ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলা এক বিবৃতিতে বলেন, নতুন এই ফলাফল ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়ায় তাদের আট মাসের যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তারা এমন এক ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়ায় আছেন, যা ভয়াবহ এক মহামারী ঠেকাতে কার্যকর হবে।

চীনের করোনাভ্যাক নিরাপদ ও দ্রুত রোগ প্রতিরোধে সক্ষম : কয়েক হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর পর চীনা সংস্থা সাইনোভ্যাক বায়োটেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ‘করোনাভ্যাক’ ৯০ ভাগেরও বেশি নিরাপদ এবং দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম। সাইনোভ্যাকের এই গবেষণা তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিস’ জার্নালে। বিবিসি।

সাইনোভ্যাক গবেষকদের দাবি, অন্যান্য টিকার থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত করোনাভ্যাক। প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে তা প্রমাণিত হয়েছে। সাইনোভ্যাকের গবেষক ঝু ফেংসাইয়ে জানান, ১৪ দিনের ব্যবধানে করোনাভ্যাকের দুটি ডোজ দেওয়া হয় এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের। তাতে দেখা গেছে, চার সপ্তাহের মধ্যেই দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস এই ভ্যাকসিন অতিমারির সময়ে আপৎকালীন ব্যবহার করা যাবে।’

সাইনোভ্যাকের আরেক গবেষক গ্যাং ঝেংয়ে বলেন, দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরির পাশাপাশি করোনাভ্যাকের আরও একটা ভালো দিক হলো- এই ভ্যাকসিন রেফ্রিজারেটরে সাধারণ তাপমাত্রা অর্থাৎ ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সংরক্ষিত করা যাবে এবং তিন বছর পর্যন্ত সুরক্ষিত থাকবে। সাইনোভ্যাক সূত্র জানায়, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ব্রাজিল এবং ইন্দোনেশিয়ায় করোনাভ্যাক দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। উল্লেখ্য, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে সাইনোভ্যাকসহ মোট পাঁচটি সংস্থা কাজ করছে চীনে। প্রত্যেকটির পরীক্ষাই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সাইনোভ্যাকও পরীক্ষার তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এই ট্রায়াল চলছে ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল এবং তুরস্কে। সংশ্লিষ্টরা জানান, চীন তাদের প্রায় পুরো মূল ভূখন্ডে মহামারী পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানানো হলেও চারটি চীনা ভ্যাকসিনের বড় আকারের সব ট্রায়ালগুলো চলছে রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব ও ব্রাজিলে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর