বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শীর্ষ নির্বাচন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প

বাইডেনকে মোদির ফোন

প্রতিদিন ডেস্ক

নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার একজন শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। এই কর্মকর্তা তার ভোট জালিয়াতির অভিযোগের বিরোধিতা করেছিলেন। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, ভোটের সুষ্ঠুতা নিয়ে ‘অত্যন্ত ভুল’ মন্তব্য করায় তিনি সাইবারসিকিউরিটি ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সির (সিসা) প্রধান ক্রিস ক্রেবসকে ‘বরখাস্ত’ করেছেন। খবরে বলা হয়, ‘গুজব নিয়ন্ত্রণ’ নামে সিসার একটি ওয়েবসাইটকে কেন্দ্র করে ক্রেবস হোয়াইট হাউসের অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে উঠেছিলেন বলে জানা গেছে। এই ওয়েবসাইট থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত ভুল তথ্যের অসারতা তুলে ধরা হতো, ওই সব তথ্যের বেশির ভাগই ছড়াতে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ভূমিকা রেখেছিলেন। এদিকে বরখাস্ত হলেও নিজের বলা কথা নিয়ে ক্রেবসের মধ্যে কোনো আক্ষেপ দেখা যায়নি বলে গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

বরখাস্ত হওয়ার পর এক টুইটে ক্রেবস বলেন, সেবা দিতে পেরে সম্মানিত। আমরা ঠিক কাজ করেছি। ‘আজ’-কে রক্ষা করে ‘আগামীকাল’কে সুরক্ষিত কর। ২০২০-কে রক্ষা কর। বরখাস্ত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে  ক্রেবস আরেকটি টুইট পোস্ট করেছিলেন, সেখানে তাকে ট্রাম্পের অভিযোগ খ-ন করতে দেখা গেছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, বিভিন্ন রাজ্যে ব্যালটগুলো তার প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে ভোটিং মেশিনগুলো। এই অভিযোগ খ-ন করে টুইটে ক্রেবস বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে কারসাজি করা হয়েছিল বলে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, ৫৯ জন নির্বাচনী নিরাপত্তা কর্মকর্তার সবাই একমত হয়েছেন যে- আমাদের জানা প্রত্যেকটি অভিযোগই হয় কোনো প্রমাণ ছাড়াই করা হয়েছে অথবা প্রযুক্তিগতভাবে অসম্ভব।

উল্লেখ্য, ৩ নভেম্বরের নির্বাচনটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সুরক্ষিত নির্বাচন হয়েছে বলে গত সপ্তাহে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে অল্প কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ক্রেবস তাদের একজন ছিলেন।

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেনের সঙ্গে মঙ্গলবার গভীর রাতে ফোনে কথা বলেছেন। আমেরিকার নির্বাচনের পরে এই প্রথম দুজনের মধ্যে কথা হলো। টুইট করে মোদি নিজেই এ কথা জনিয়েছেন। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, উভয় নেতা কৌশলগত সম্পর্ক মজবুত করার পাশাপাশি কভিড ভ্যাকসিন সস্তা দরে বণ্টনের বিষয়ে আলোচনা করেন। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বাইডেনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। একই সঙ্গে তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকেও শুভেচ্ছা জানানোর কথা বলেছেন। এক পদস্থ সরকারি কর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাইডেনকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাশাপাশি পৃথক আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে কমলা হ্যারিসকেও। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাইডেনের সঙ্গে মোদির সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০১৪ ও ২০১৬ সালে। তখন প্রধানমন্ত্রী সরকারি সফরে আমেরিকা গিয়েছিলেন। জো বাইডেন ২০১৬ সালে কংগ্রেসের পৌরোহিত্য করেন।

মোদি নিজে লিখেছেন, ‘ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক উন্নতির প্রতিশ্রুতি নিয়ে কথা হয় দুই নেতার মধ্যে। জলবায়ু পরিবর্তন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতা, কভিড অতিমারীর মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তিনি এও লিখেছেন, ‘কমলা হ্যারিসের মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূতের উপরাষ্ট্রপতি হওয়া ভারতীয়-আমেরিকানদের কাছে গর্বের বিষয়।’

প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোদি বলেছেন আমেরিকার সাম্প্রতিক নির্বাচন দেশটির মহান গণতান্ত্রিক নিদর্শনের পরিচায়ক। গত ৮ নভেম্বর নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী মোদি জো বাইডেনকে জয়ী হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান টুইট করে। তার ১০ দিনের মাথায় এ টেলিফোন বাক্যালাপ উভয় দেশের সম্পর্ককে মজবুত করবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর