শিরোনাম
রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

হতদরিদ্র পরিবারের দুজন যেভাবে হয়ে ওঠে জঙ্গি

পাবনা প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আত্মসমর্পণ করা সন্দেহভাজন চার জঙ্গির মধ্যে দুজনের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায়। এরা হলেন উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের দাড়ামুদা গ্রামের আবু তালেবের ছেলে নাঈমুল ইসলাম ও মোখলেছুর রহমানের ছেলে কিরণ ওরফে হামিম ওরফে শামীম।

দুজনই পরস্পরের বন্ধু। একই ক্লাসের ছাত্র ছিলেন তারা। গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান নাঈমুল ও কিরণ। তারা স্থানীয় খোয়াজউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। দুজনই এলাকায় ধার্মিক ও বিনয়ী ছেলে হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে নাইমুলের বাবা ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে যা ভাড়া পান তা দিয়ে সংসার চালান। অন্যদিকে কিরণের মা দর্জির কাজ করেন এবং বাবা মুদি দোকানদার। ২০১৭ সালে নাটোরের বাগাতিপাড়া থেকে আসা স্থানীয় মসজিদের ইমাম জুয়েল রানার হাতে বাইয়াত নেন নাঈমুল ও কিরণ। তারা অল্প সময়ে ওই ইমামের ভক্ত হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময়ে নামাজের নিয়মকানুন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে ওই ইমামকে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দেন এলাকাবাসী। চাকরি চলে যাওয়ার পর ধাড়ামুদা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আতাউর রহমানের বাড়িতে আসতেন ইমাম জুয়েল রানা। কিরণ হোসেন শামীমের বাবা মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ইমামের সঙ্গে চলাফেরা করত আমার ছেলে শামীম ও নাঈমুল। দুই-তিন মাস আগে নারায়ণগঞ্জে চাকরির কথা বলে বাড়ি থেকে দুজন একসঙ্গে বের হয়। তারা একটি জুট মিলে চাকরি করে বলে বাড়িতে জানিয়েছিল। ১২ নভেম্বর বাড়িতে এসে আবার ১৪ নভেম্বর চলে যায়। শুক্রবার বিভিন্ন লোকের মুখে শুনতে পাই আমার ছেলে জঙ্গি, তাকে আটক করেছে র‌্যাব।’

জঙ্গি নাঈমুলের চাচা ধাড়ামুদা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘আমার ভাতিজা গ্রামের সহজ-সরল ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল। তার এমন কাজে আমরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’ সাঁথিয়ার খোয়াজউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সিরাজউদ্দৌলা বলেন, ‘নাঈমুল ও কিরণ দুজনই তার প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তারা এলাকায় এলে বিভিন্ন ছেলে তাদের সঙ্গে মেলামেশা করত। এলাকার অন্য ছেলেদের বিষয়ে এখন আমরা চিন্তিত হয়ে পড়েছি।’ এ ব্যাপারে নন্দনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিটন বলেন, ‘তারা দুজনই আওয়ামী পরিবারের সন্তান। রাজশাহী থেকে আসা ওই হুজুরের (ইমাম) দুজনই মুরিদ হয়। তিনি তাদের ব্রেন ওয়াশ করে ভিন্ন পথে নিয়ে যান।’ এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ওই দুজন সম্পর্কে আমরা খোঁজ নিয়েছি। তাদের নামে থানায় কোনো মামলা নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর