সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষণ আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ষণ আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে

ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ধর্ষণ আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে। শিশু ধর্ষণ চলছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। আজ মানুষ হতাশ হচ্ছে। মানুষ আত্মহত্যা করছে। আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রতিরোধ দরকার। এই প্রতিরোধের মূল দায়িত্ব রাষ্ট্রের। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) ‘ধর্ষণ প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘শুধু আইনের শাসন দিয়ে ধর্ষণ প্রতিরোধ সম্ভব নয়। মৃত্যুদন্ডের ভয়েও যে ধর্ষক সংযত হবে সেটাও ঠিক নয়। এর জন্য প্রয়োজন সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন। আইনের শাসনের চেয়ে আমি জবাবদিহিকে বড় মনে করি। কারণ জবাবদিহি থাকলে আইনও বদল হবে। আসল কথাটি হচ্ছে জনমত। ভরসা কিন্তু এই সংসদে নয়, ভরসা সরকারও নয়, ভরসা হচ্ছে সেই জনমত, যে জনমত সংসদ ও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে, যেখানে থাকবে জবাবদিহি।’ তিনি বলেন, গণতন্ত্র কেবল ভোটের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় না। জনমত তৈরি হবে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। সে ক্ষেত্রে মিডিয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আজ মিডিয়া যত শক্তিশালী, অতীতে কখনো মিডিয়া এত শক্তিশালী ছিল না। মিডিয়া যদি এই খবরগুলো তুলে ধরে, জনমত গঠনে সহায়তা করে, তাহলে মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হবে। এই ইমেরিটাস অধ্যাপক বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন কোনো ছাত্র সংসদ নেই। সাংস্কৃতিক চর্চা নেই। কোনো বিতর্ক নেই, খেলাধুলা নেই।’ সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি, বিচারের দীর্ঘসূত্রতাসহ মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে আমাদের ধর্ষণ নামক মহামারী প্রতিরোধ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। নারীর প্রতি নিপীড়ন বন্ধে শুধু আইন প্রয়োগ করে সম্ভব হবে না। তা প্রতিরোধে আইনের বাস্তবায়নের পাশাপাশি গণজাগরণ তৈরি করতে হবে।’

প্রতিযোগিতায় তেজগাঁও কলেজকে পরাজিত করে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক আরিফুর রহমান, সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন, সাংবাদিক আঙ্গুর নাহার মন্টি ও সাংবাদিক সাজেদা পারভিন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর