মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ কার্যকর

ফাইজার-মডার্নার চেয়ে দাম কম স্পুটনিকের

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন বাজারে আসার আগেই এর দাম নিয়ে উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে ঠা-া লড়াই শুরু হয়ে গেছে। গত রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না তাদের ভ্যাকসিনের দাম প্রতিটি ডোজ ২৫ থেকে ৩৭ ডলার বলে জানানোর পর গতকাল রাশিয়া বলেছে, ফাইজার আর মডার্নার চেয়ে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি-এর দাম অনেক কম, যা সাধারণের সাধ্যের মধ্যে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কভিড প্রতিষেধক বাজারে আসতে আর খুব বেশি দেরি নেই। এর মধ্যেই ভ্যাকসিনের দাম নিয়ে ঠা-া লড়াই শুরু হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার বা মডার্না নিজেদের ভ্যাকসিনের যে দাম রেখেছে, তাতে বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পক্ষে সেই ভ্যাকসিন কেনা সম্ভব নয়। ফলে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের খরচ তুলনামূলক কম হওয়ায় সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। এই অবস্থায় স্পুটনিক-ভি থেকে জানিয়ে দেওয়া হলো, ‘ফাইজারের প্রতিটি ডোজের দাম রাখা হয়েছে প্রায় ২০৩ ডলার। অন্যদিকে মডার্নার ভ্যাকসিনের দাম খরচ ২৫ থেকে ৩৭ ডলার। প্রত্যেক ব্যক্তিকে দুটি করে ডোজ দেওয়া হলে ফাইজারের ভ্যাকসিনের জন্য খরচ হবে প্রায় ৪০৬ ডলার। মডার্নার ভ্যাকসিনের জন্য খরচ হবে ৫১ থেকে ৭৪ ডলার প্রায়। কিন্তু স্পুটনিক ভি-এর দাম হবে এর অনেক কম।’ প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়ে রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের ভ্যাকসিন ৯২ শতাংশ কার্যকরী। অন্যদিকে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা মডার্না ট্রায়ালের রিপোর্টে জানিয়েছে, তাদের ভ্যাকসিন ৯৪.৫ শতাংশ কার্যকরী। ফাইজার জানিয়েছে, তাদের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকরী এবং বৃদ্ধদের শরীরেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।  

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে ৭০ শতাংশ সুরক্ষা : যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারে বলে গতকালের ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান ও বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে মার্কিন কোম্পানি ফাইজার ও মডার্না তাদের তৈরি ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারে বলে দাবি করে। তবে ওই দুই ভ্যাকসিনের চেয়ে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের দাম বেশ কম। আর এর সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও জটিলতা কম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট বলেন, ‘ভ্যাকসিনের সুরক্ষার এই ঘোষণার মাধ্যমে কভিড-১৯-এর ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেতে আমরা আরও এগিয়ে গেলাম। এ ভ্যাকসিন ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এই ভয়াবহতা থেকে মুক্তির সন্ধান করতে পারব।’ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিন ধাপে ভ্যাকসিন পরীক্ষার অন্তর্বর্তী বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দুটি ডোজের ব্যবহারে কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ পাওয়া গেছে। অপর দুটির কার্যকারিতা ৯০ এবং ৬২ শতাংশ। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্সফোর্ডের এ ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। অর্ধেক স্বেচ্ছাসেবক যুক্তরাজ্যের, বাকিরা ব্রাজিলের। এর মধ্যে ৩০ জন কভিড-১৯ রোগীর ওপর ভ্যাকসিনের দুই ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। আর ১০১ জন ভিন্ন টিকা পান। গবেষকরা বলছেন, ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ সুরক্ষা দিচ্ছে। যখন স্বেচ্ছাসেবকদের উচ্চমাত্রার দুই ডোজ দেওয়া হয়েছে, তখন তাদের সুরক্ষার পরিমাণ ছিল ৬২ শতাংশ। আর যখন দুই ডোজের মধ্যে একটি নিম্নমাত্রার ডোজ দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে সুরক্ষার পরিমাণ ছিল ৯০ শতাংশ। এই ভিন্নতা কেন, সে সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের প্রধান পরীক্ষক অধ্যাপক এন্ড্রু পোলার্ড বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা টিকার ফলাফলে সত্যিই খুব খুশি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর