শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সবার জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন চাই

মাহমুদ আজহার

সবার জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন চাই

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন সবাইকে বিনামূল্যে দেওয়া উচিত। এটা জনগণের অধিকার। তবে সেই ভ্যাকসিন হতে হবে মানসম্মত ও নির্ভরযোগ্য। এ নিয়ে তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। প্রয়োজনে সরকার সব ভ্যাকসিন আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই যোগাযোগ করবে। যেটা সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য, তাই নিতে হবে। ভ্যাকসিন না কিনে গ্যাবি বা ইউনিসেফের মাধ্যমে ফ্রি আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সরকারকে আন্তর্জাতিক এসব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বাড়াতে হবে কূটনৈতিক তৎপরতা। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে এসব কথা বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ভ্যাকসিন কেউ পাবে কেউ পাবে না, তা হওয়া উচিত নয়। ভ্যাকসিনে সবারই সমান অধিকার থাকা উচিত। এ জন্যই সরকার ভর্তুকি দিয়ে হলেও দেশের সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। তবে এ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এখনই উদগ্রীব হওয়া উচিত নয়। কেমন ভ্যাকসিন হওয়া উচিত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন ভ্যাকসিন হওয়া জরুরি, যা সহজে পরিবহন করা যায়। সবার জন্য সহজলভ্য হয় এবং তা দীর্ঘমেয়াদি টেকসই হয়। অন্তত দুই বছর টেকে। ফ্রিজিং যেন না করতে হয়। কারণ, সবাই এটা করতে পারবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষও যেটা সহজেই পেতে পারে তেমন ভ্যাকসিনই আমরা চাই। আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রবীণ এই চিকিৎসক বলেন, আমার মনে হয়, এ বছর ভ্যাকসিন পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নতুন বছরে যখনই আসুক, আমরা যেন নির্ভরযোগ্য নির্ভেজাল টেকসই ভ্যাকসিন পাই, তা বিশ্বের যে সংস্থাই আবিষ্কার করুক না কেন। ২৫ থেকে ৩০ ডলার দিয়ে আমাদের ভ্যাকসিন কেনার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এটা ঠিক যে, একটা ভ্যাকসিন তৈরি করতে গবেষণাটাই ব্যয়সাপেক্ষ। কিন্তু এটা তৈরি করতে খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। তাই ভ্যাকসিনের এত চড়া দাম হওয়া উচিত নয়। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এটা নিয়ে আমাদের ক্যাম্পেইন করতে হবে, যাতে ফ্রি পাই। কেনার চিন্তা মাথায় আনা উচিত নয়। এটা নির্ভর করবে, সরকারের কূটনৈতিক দূরদর্শিতার ওপর। আমাদের মতো দেশে সবার জন্য ভ্যাকসিন কেনা অসম্ভব ব্যাপার। প্রবীণ এই চিকিৎসক আরও বলেন, আমাদের প্রথম কাজ হবে, ভ্যাকসিনের জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা। সব ভ্যাকসিনই যাচাই-বাছাই করে কোনটা ব্যবহার উপযোগী ওটাকেই নিতে হবে। ভারতের পাশাপাশি চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতে হবে। তাড়াহুড়ো করে টাকা নষ্ট করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। দেশের সব জায়গায় এই ভ্যাকসিন পৌঁছাতে হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার যেন প্রয়োজন না হয়। অন্তত দুই বছর যেন একটা ভ্যাকসিন টেকই হয় সে বিষয়টিও যেন আবিষ্কারকরা খেয়াল রাখেন।

সর্বশেষ খবর