সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

তিন দিনেও গ্রেফতার নেই চার চিকিৎসক

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থানা পুলিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

কিডনিতে অস্ত্রোপচারের কথা বলে দুটি কিডনিই সরিয়ে ফেলার কারণে রওশন আরা নামে এক নারী হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চার চিকিৎসক তিন দিনেও গ্রেফতার হননি। দৃশ্যত অভিযানের কথা বলা হলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখনো স্পষ্ট সিগন্যাল দেননি বলে পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যদিও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ দাবি করেছেন, চার চিকিৎসককে গ্রেফতারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘নলেজে’ রয়েছে। তারা যেভাবে বলছেন সেভাবে তদন্ত চলছে। তাদের ধরতে সম্ভাব্য  বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত আছে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মামলার পর থেকে এজাহারভুক্ত চিকিৎসকরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। হাসপাতালেও আসছেন না। এ কারণে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা জঘন্য। তবে চিকিৎসকরা ধরা পড়লে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে আরও পরিষ্কার হওয়া যাবে। তবে মামলার বাদী রফিক সিকদার গতকালও জোর দিয়ে বলেছেন, তার মায়ের কিডনি কেটে নিয়ে ডা. মামুন নিজের মায়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। এই খুনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএসএমএমইউর অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল। ডিএনএ পরীক্ষা করলে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে বলে অনেক অপরাধ বিশেষজ্ঞ নিশ্চিত করেছেন।’ প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর রওশন আরা নামের ওই রোগীর ক্ষতিগ্রস্ত একটি কিডনি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করতে গিয়ে ‘পরিকল্পিতভাবে’ দুটি কিডনি অপসারণ করা হয়। ফলে রোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বিএসএমএমইউর চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শুক্রবার শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। ঘটনার দুই বছর এক মাস পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে রওশন আরার ছেলে রফিক সিকদার বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। তিনি পেশায় চলচ্চিত্র নির্মাতা। মামলায় প্রধান আসামি বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল। অন্য তিন আসামি হলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারুক হোসেন, চিকিৎসক মোস্তফা কামাল ও আল মামুন। এ ঘটনায় রওশন আরার পরিবার শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিল, বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের কয়েকজন চিকিৎসক রওশন আরার দুটি কিডনি কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। রওশনকে যখন বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন সেখানে ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক মামুনের মাকে ভর্তি করা হয়। তার দুটি কিডনি নষ্ট ছিল। রওশন আরার দুটি কিডনি কেটে নিয়ে ডা. মামুনের মায়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. মামুনের মা এখন পুরোপুরি সুস্থ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর