বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
একনেকে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনসহ চার প্রকল্প অনুমোদন

ব্যান্ডউইথ কিনবে সৌদি ভারত নেপাল ভুটান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যান্ডউইথ কিনবে সৌদি ভারত নেপাল ভুটান

চাহিদা অনুযায়ী উচ্চ গতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করার জন্য তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ ছাড়া আরও তিনটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে একনেক সভায়। চার প্রকল্পে ব্যয় হবে ২ হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অনুমোদিত চারটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি সংশোধিত এবং একটি নতুন।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ  ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া ‘বাংলাদেশেরআন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন’ শীর্ষক এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পকে ‘সময়োপযোগী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৩০১ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। বাকি ৩৯২ কোটি টাকার জোগান দেবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কোম্পানি বিএসসিসিএল। চলতি বছর অক্টোবরে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে ড. শামসুল আলম বলেন, প্রকল্পটি নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। সৌদি আরব কীভাবে ব্যান্ডউইথ নেবে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব, ভারত, নেপাল, ভুটান ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত এসএমডব্লিউ-৬ সাবমেরিন ক্যাবল ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূমধ্যসাগর অবধি বিস্তৃত হবে। এর কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিসর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারে ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ৩ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ (প্রথম সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে ড. শামসুল আলম বলেন, ইন্টারনেট সেবা রিমোট এলাকায় নিয়ে যেতে বিটিসিএলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু নগরে নয়, হাওর-বাঁওড় ও পাহাড়ি এলাকায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে বিটিসিএলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে ৪০৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা খরচ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘মিউনিসিপ্যাল গভারন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস’ প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ২ হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২ হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ২৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বাড়িয়ে করা হলো ২ হাজার ৭৪৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর