শিরোনাম
শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

গোল্ড মনিরের বিরুদ্ধে আট বছর পর দুদকের চার্জশিট দাখিল হচ্ছে

দ্বিতীয় দফায় ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১২ সালে প্রথম মনির হোসেন ওরফে গোল্ড মনিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে রিট করে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল মামলার তদন্ত কাজ। কিন্তু এতে শেষ রক্ষা হচ্ছে না মনিরের। এখন আট বছর পর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

এদিকে, রাজধানীর বাড্ডা থানায় পৃথক তিন মামলায় গোল্ড মনিরের দ্বিতীয় দফায় নয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার দুজন মহানগর হাকিম পৃথক আদেশে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, দুদকের মামলায় সংস্থার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন মৃধার প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে গতকাল কমিশন অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে এবং শিগগিরই তা বিচারিক আদালতে জমা দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ২০১২ সালে দুদক প্রথম গোল্ড মনিরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা করে। তাতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তার ৩ কোটি ১০ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ দেওয়া হয়। পরে এ মামলার বিরুদ্ধে মনির উচ্চ আদালতে রিট করলে তদন্ত কাজ স্থগিত থাকে। ২০১৮ সালে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে মামলার তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে তার ওই টাকার কোনো  বৈধ উৎস খুঁজে না পাওয়ায় অভিযোগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। দুদকের সিনিয়র সচিব দিলোয়ার বখত জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও নতুন করে তার বিরুদ্ধে সম্পদের অনুসন্ধান চলছে।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে মনিরের নামে ৬১০ কোটি এবং তার স্ত্রীর নামে সাড়ে ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানা যায়। অথচ মনিরের স্ত্রী রওশন আক্তার একজন গৃহিণী। কিন্তু তার এসব সম্পদ অর্জনের কোনো বৈধ উৎস পায়নি সংস্থাটি। দুদক সূত্র জানায়, আট বছর আগে ২০১২ সালে মনিরের অবৈধভাবে অর্জিত এক কোটি ৬১ লাখ টাকার সম্পদ মা ও স্ত্রীর নামে দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করে সংস্থাটি।

 গত ২১ নভেম্বর নিজ বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ মনির হোসেন ওরফে গোল্ড মনিরকে গ্রেফতার করার কথা জানায় র‌্যাব।

৯ দিনের রিমান্ড : আদালত সূত্র জানায়, গত ২২ নভেম্বর গোল্ড মনিরের বিরুদ্ধে করা তিন মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। তবে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় সাত দিনের পৃথক রিমান্ড একত্রে চলমান থাকায় ১১ দিনে শেষ হয় এই রিমান্ড। গতকাল প্রথম দফা রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসীন গাজী। অপরদিকে একইদিনে মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার এসআই জানে আলম দুলাল পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তিন দিন করে ছয় দিন এবং মাদক মামলায় অপর মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে, আগের রিমান্ডে ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সোনা চোরাচালান, রাজউকের প্লট দখল ও বিদেশে টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম বেরিয়ে এসেছে গোল্ড মনিরের মুখ থেকে। তার কাছ থেকে নেওয়া বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে মনিরের চার সহযোগীকে শনাক্তের পর তাদের বাসাবাড়ি ও অফিস নজরদারি শুরু করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর