বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
সম্পত্তির বিরোধ

দুই দিন পর পুলিশের উপস্থিতিতে পিতার লাশ দাফন

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সম্পত্তির বিরোধে পিতার লাশ দাফনে বাধা দিয়েছে প্রথম সংসারের ছয় মেয়ে। এদিকে সম্পত্তি দিতে অস্বীকৃতি জানায় দ্বিতীয় সংসারের সন্তানরাও। অবশেষে পুলিশের উপস্থিতিতে শালিসে বিরোধ সমাধান করা হয়। মৃত্যুর দুই দিন পরে মঙ্গলবার রাত ১০টায় তার লাশ দাফন করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের কবরুয়া গ্রামে। নিহতের নাম মো. নুরুল হক ভূঁইয়া (৭৮)।

শুক্রবার ভোরে নুরুল হক ভূঁইয়া ব্রেইন স্ট্রোক করলে তাকে ঢাকায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সোমবার তার মৃত্যু হয়। লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলে তার দুই পরিবারের সন্তানরা সম্পত্তি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে লাশ দাফনে বাধা দেয়। জানা গেছে, নুরুল হক ভূঁইয়া প্রায় ৫০ বছর আগে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের কাগাইশ গ্রামের আয়েশা আক্তারকে বিয়ে করেন। নুরুল হক-আয়েশা দম্পতির ছয় কন্যা সন্তান রয়েছে। চট্টগ্রাম স্টিল মিলে চাকরির সুবাধে সুরমা আক্তার নামে সন্দ্বীপের আরেক নারীকে বিয়ে করেন। নুরুল হকের দ্বিতীয় সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তিনি নতুন বাড়ি করে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা নুরুল হক ভূঁইয়া থেকে ১৪০ শতক জমি কবলা করে তাদের নামে নেন। প্রথম স্ত্রী সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা দাবি করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হলেও বাড়িতে এসে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা আবারও সম্পত্তি থেকে তাদের বঞ্চিত রাখে। নুরুল হক ভূঁইয়ার মৃত্যু হলে পিতার সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে লাশ দাফনে বাধা প্রদান করেন প্রথম স্ত্রীর ছয় মেয়ে। প্রবাস থেকে দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে নুরুল আফছার মোবাইলে গ্রামবাসীকে বলেন, ‘বাবার লাশ দাফনের দরকার নেই, আমরা কাউকে এক শতক সম্পত্তিও দেব না’। চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দুই পরিবার ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শালিসের মাধ্যমে সমাধান করা হয়। ছয় মেয়েকে ১৪ শতক জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার রাত ১০টায় পুলিশ উপস্থিত থেকে জানাজার ব্যবস্থা করে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর