বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ের ১০ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ হাজার ৮৮৯ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের ১০টি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে অনলাইনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবসহ মোট ১৫টি ক্রয় প্রস্তাব উপস্থাপিত হলে এর মধ্যে ১০ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৮৯ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত            সচিব জানান, বেসরকারি খাতে বাগেরহাটের মোংলায় ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৩৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। যৌথভাবে চীনের একটি, বাংলাদেশের একটি ও হংকংভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়েছে। সুপারিশকৃত দরদাতা চীনের কনসোর্টিয়াম অব ইনভেশন এনার্জি, এসকিউ ট্রেডিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও হংকংভিত্তিক ইনভেশন অব রিনিওয়াবেল এনার্জি লিমিটেড। ১০ টাকা ৫৬ পয়সা কিলোওয়াট পার আওয়ার মূল্যে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে ২০ বছরের চুক্তিতে। বৈঠকে অনুমোদিত অন্য প্রস্তাবগুলো হলো- ‘নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক সড়ক (আর-১১১) (সাইনবোর্ড-চাষাঢ়া) ছয় লেনে উন্নীতকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের প্যাকেজের কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৪ কোটি ২৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯০৭ টাকা। কাজটি যৌথভাবে পেয়েছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড এবং হাসান টেকনো ব্রাদার্স লিমিটেড। এখানে লিড পার্টনার হিসেবে থাকছে তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড।

এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন প্রকল্প-১ (চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌপথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ) (প্রথম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মাল্টিপারপাস ইনসেপ্ট অন ভেসেল ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন। দুই লটে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

লট ওয়ানের ক্রয়মূল্য ৫৭ কোটি ১০ লাখ এবং লট টুর ক্রয়মূল্য ৫০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে জেএফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেড, আনন্দ শিপইয়ার্ড ও স্লিভওয়ে লিমিটেড। চলতি অর্থবছরের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কাতার ও সৌদি আরব থেকে ৭৫ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনার তিনটি পৃথক প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে সরকারের মোট ব্যয় ধরা হবে ১৬৭ কোটি ৮৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। অতিরিক্ত সচিব জানান, চলতি অর্থবছর রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে কাতারের মুনতাজ থেকে অষ্টম লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন প্রস্তাব করা হয়। ৫৬ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকায় এ সার আনা হবে। বৈঠকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে চলতি অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের এসএবিআইসি থেকে নবম লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন প্রস্তাব করা হয়। ৫৫ কোটি ৯০ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় এ সার আনা হবে।

চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরবের এসএবিআইসি ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন প্রস্তাব করা হয়। ৫৫ কোটি ৯০ লাখ টাকায় এ সার কেনা হবে।

এ ছাড়া খাদ্য অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্পের আওতায় আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণকাজের সুপারভিশন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্রিকো ফ্রান্সের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তি সংশোধনের প্রস্তাব। ২১ কোটি ৫৫ লাখের সঙ্গে ২২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা যুক্ত হয়েছে। ভেরিয়েশন দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৯ লাখ টাকা।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ভারত থেকে ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। অতিরিক্ত সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্যাকেজ টুর আওতায় ৫০ হাজার টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল ক্রয় প্রস্তাবে সায় দেওয়া হয়েছে। এর সুপারিশকৃত দরদাতা ভারতের মুম্বাইয়ের এম এস রিকা গ্লোবাল ইমপ্যাক্টস লিমিটেড। আবু সালেহ বলেন, ২ কোটি ২ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ ডলার বা ১৭১ কোটি ৪৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকায় এ চাল কেনা হচ্ছে। প্রতি কেজি ৩৪ টাকা ২৮ পয়সা দেশের বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত খরচ পড়বে। প্রতি টনে ক্রয়মূল্য দাঁড়াবে ৪০৪.৩৫ ডলার। ভারত থেকে এ চাল আসবে।

এর আগেও ৩৩তম ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৭৬ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ৫০ হাজার টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছিল কমিটি। তখন প্রতি কেজি চালের দাম ধরা হয়েছিল ৩৫ টাকা ২৭ পয়সা। আর প্রতি টনে ক্রয়মূল্য দাঁড়াবে ৪১৬ ডলার। এর সুপারিশকৃত দরদাতা হচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের এমএসপিকে এগ্রি লিঙ্ক প্রাইভেট লিমিটেড।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর