শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রায়ের কপির জন্য যেন ঘুরতে না হয় : রাষ্ট্রপতি

প্রতিদিন ডেস্ক

রায়ের কপির জন্য যেন ঘুরতে না হয় : রাষ্ট্রপতি

মামলার রায়ের পর যাতে বিচারপ্রার্থীদের আদালতের বারান্দায় ঘুরতে না হয়, সেদিকে নজর দিতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। বিডিনিউজ

নিজের আইন পেশার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি নিজে একজন আইনজীবী হিসেবে জানি বিচার কাজ কত কঠিন ও জটিল। বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় একজন বিচারককে কতটা পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু তারপরও আমি বলব, মামলার পরিমাণ দিন দিন যে হারে বাড়ছে, সেটাকে আয়ত্তের মধ্যে আনতে হলে বিচারকদের আরও বেশি কাজ করতে হবে। সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু বিচারকদের খেয়াল রাখতে হবে, মামলার রায় হওয়ার পর রায়ের কপি পাওয়ার জন্য বিচারপ্রার্থীদের যেন আদালতের বারান্দায় দিনের পর দিন ঘোরাঘুরি করতে না হয়।

সুপ্রিম কোর্টের সব কার্যক্রম ডিজিটালি সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আদালত প্রাঙ্গণে শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে বিচারপ্রার্থী জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এ জন্য আমি এ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’। তাই মনে রাখতে হবে, একজন বিচারপ্রার্থীর ন্যায়বিচার পাওয়া তার অধিকার। আর নাগরিকের সে অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এখানে দয়া বা অনুকূল্যের  কোনো বিষয় নেই। দেশ, জনগণ ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বিচারক, আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের মেধা ও মনন প্রয়োগের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন, সুপ্রিম কোর্ট দিবসে এটাই সবার প্রত্যাশা।

আবদুল হামিদ বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম হলো শান্তি ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুযোগ তৈরি করা। উন্নয়নের সঙ্গে ন্যায়বিচার এবং আইন-আদালতের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। একটা কথা মনে রাখতে হবে, বিরোধের মীমাংসা যথাযথভাবে না হলে আস্থার সংকট সৃষ্টি হবে। আর এই প্রক্রিয়া বারবার চলতে থাকলে রাষ্ট্র ও সমাজে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল অনুষ্ঠানে বক্তব্য  দেন। অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট’ স্মারক গ্রন্থের ডিজিটাল সংস্করণ উন্মোচন করা হয়। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসের ওপর একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর