সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শোকজের জবাব দিলেন দুই নেতা, এখনই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দলীয় দুই ভাইস চেয়ারম্যান শোকজের জবাব দিলেও এখনই তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছে না বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ রকম ধারণা পাওয়া গেছে।

তাদের মতে, বিষয়টি স্পর্শকাতর। ভাইস চেয়ারম্যান পদের কোনো নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হলে বিষয়টি নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হতে হবে। সেজন্য এ বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত হবে না। গত শনিবার দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হলেও সেখানে বিষয়টি আলোচনায় ওঠেনি। জানা গেছে, দলের দুই ভাইস চেয়ারম্যানের শোকজের জবাব লন্ডনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে। একাধিক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকা কোনো নেতার শোকজের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রটোকল মানা উচিত। অন্ততপক্ষে চেয়ারম্যান অথবা মহাসচিবকে এই শোকজ নোটিসে স্বাক্ষর করা উচিত। স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান অথবা যে কোনো সিনিয়র নেতাকে শোকজের যে চিঠি লেখা হয় তাতে ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভীর কাছে শোকজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। এদিকে হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে শোকজ প্রদানে দলের নেতা-কর্মীদের ভিতরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সিনিয়র নেতারা দলীয় শৃঙ্খলার কারণে কথা বলতে চাচ্ছেন না। তবে বিষয়টিকে ‘রহস্য’ ঘেরা বলে অভিহিত করেছেন দলটির একজন সিনিয়র নেতা। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের দল বলা হয়। সেই দলের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বিজয়ের মাসে এভাবে শোকজ করা আমি ভালো চোখে দেখছি না। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে রহস্যজনক। আমার কাছে তথ্য আছে, দলের স্থায়ী কমিটির অনেক সদস্যই এরকম অ্যাকশনের কথা শুনে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এটা দলের ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি করেছে। মনে হচ্ছে, দল থেকে সিনিয়র নেতাদের বিতাড়িত করার প্রজেক্ট চলছে। গত ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও শওকত মাহমুদকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে শোকজ করে বিএনপি। দলের পক্ষে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব স্বাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয়। ১৬ ডিসেম্বর শওকত মাহমুদ এবং গত শনিবার হাফিজ উদ্দিন আহমদ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দফতরে তাদের জবাব জমা দেন। হাফিজ উদ্দিন তার পাঁচ পৃষ্ঠার জবাব স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির নেতৃত্বের কাছে। তার বিরুদ্ধে যে ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয় বলে প্রত্যেকটি অভিযোগ কড়া ভাষায় খন্ডন করেছেন তিনি। অন্যদিকে শওকত মাহমুদ তার এক পৃষ্ঠার জবাবে জ্ঞাতসারে তিনি দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজ করেনি বলে উল্লেখ করেছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তারা জবাব দিয়েছেন। এটা নিয়ে ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ আছেন। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন, দল সিদ্ধান্ত নেবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর