মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য বড় ধরনের সমন্বয় প্রয়োজন

-হুমায়ূন কবির

অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য বড় ধরনের সমন্বয় প্রয়োজন

অর্থনৈতিক কূটনীতি পরিচালনার জন্য বড় ধরনের সমন্বয় প্রয়োজন মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির। তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে অর্থনৈতিক কূটনীতির সাফল্য ঘরে তুলতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে বড় ধরনের সমন্বয় প্রয়োজন। তা না            হলে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসা অর্থনৈতিক কূটনীতি কথাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, সুফল পাওয়া যাবে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। বেসরকারি থিঙ্কট্যাঙ্ক বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট হুমায়ূন কবির বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতি অবশ্যই খুবই সময়োপযোগী উদ্যোগ। সারা পৃথিবীতেই অর্থনীতি কূটনীতির প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠছে। তবে অর্থনৈতিক কূটনীতির অনেক শাখা-প্রশাখা আছে। এর জন্য শুধু বাইরের দেশে কূটনৈতিক চেষ্টা চালালেই হবে না। দেশের অভ্যন্তরেও অনেক কাজ আছে। বেসরকারি উদ্যোক্তা, প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ সমন্বয় করে সরকারের মাধ্যমে বিশ্বে তুলে ধরতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতির সাফল্যের জন্য চারটি বিষয় প্রয়োজন হবে। প্রথমত. দেশের যেসব মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের মধ্যে একটা সমন্বয় প্রয়োজন। বাইরের পৃথিবীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে হবে। এর পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পর্যটন মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মতো প্রয়োজনীয় সব মন্ত্রণালয়ের একটা সমন্বয় প্রয়োজন। তাদের সমন্বিত কাজকেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বে তুলে ধরবে। আবার বিশ্ব থেকে পাওয়া প্রতিক্রিয়া অনুসারে দেশের অভ্যন্তরে ব্যবস্থা নেবে সরকারি এসব সংস্থা ও মন্ত্রণাণয়। দ্বিতীয়ত. অর্থনীতির মূল প্রাণ বেসরকারি কোম্পানি, উদ্যোক্তা, কৃষক ও শ্রমিকদের আন্তমন্ত্রণালয়ের সমন্বিত মূল চেইনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। কারণ তাদের মাধ্যমেই দেশের ৯৫ শতাংশ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। এদের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করে তার বৈশ্বিক সার্টিফিকেশন করে নিতে পারলে তবেই সে পণ্য চলবে। তৃতীয়ত. বাইরের বিশ্বের পরিবর্তিত অর্থনৈতিক চাহিদা সম্পর্কে সবাইকে জানতে হবে। পরিবর্তনের ধারা আমাদের বুঝতে হবে। ধরা যাক, এখন কেউ যদি কাঁচা পাটা বিক্রি করতে চায় তাহলে তো তা বিক্রি হবে না। কিন্তুপাটকে প্রসেস করে মার্সিডিজ গাড়ির ভিতরের লাইনিং তৈরি করা গেলে সেটা উচ্চমূল্যে বিক্রি হবে। সে পণ্যের বিশ্বের চাহিদা থাকবে। এ চাহিদা দেখে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ পণ্যের ওপর বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবেন বা হতে পারেন। চতুর্থত. অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য আরেকটি বড় বিষয় হলো বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ। এটা শুধু আইন দিয়ে হয় না। আইনের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় এখানে জড়িত। ইদানীং খবরে আসছে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে, কোনো সমস্যা তৈরি হলে তা সমাধানের ক্ষেত্রেও সংকট আছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিষয়গুলো জড়িয়ে আছে। এ বিষয়গুলোকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর