বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বিমান চলাচল আবার হুমকিতে

যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন সংক্রমণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা

জয়শ্রী ভাদুড়ী

বিমান চলাচল আবার হুমকিতে

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন উপসর্গ ও সংক্রমণ ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এর ফলে আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে বেশ কিছু দেশ। ইতিমধ্যেই ইউরোপিয় ইউনিয়নের ১৭ দেশ, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমানসহ ৪৩ দেশ যুক্তরাজ্যে ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ ছাড়া সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করেছে সৌদি আরব। এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যুক্তরাজ্যে বর্তমান সংক্রমণ পরিস্থিতি আমরা পর্যালোচনা করছি। কিন্তু এখনই যুক্তরাজ্যে ফ্লাইট বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সে ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হলে আমরা গণমাধ্যমকে জানাব। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে ৪৩ শতাংশ নতুন সংক্রমণ, পূর্ব ইংল্যান্ডে ৫৯ শতাংশ এবং লন্ডনে ৬২ শতাংশ নতুন সংক্রমণের পেছনে এ রূপান্তরিত স্ট্রেইন দায়ী। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর সূত্রে জানা যায়, ইংল্যান্ডের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা অধ্যাপক ক্রিস হুইটি বলেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে খুব দ্রুত এর সংক্রমণ বেড়েছে। প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যালান্স বলেছেন, অস্বাভাবিকভাবে বড় সংখ্যায় এর রূপান্তর দেখা গেছে। করোনাভাইরাসের নতুন এ স্ট্রেইনটির ২৩টি ভিন্ন ভিন্ন পরিবর্তন দেখা গেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ভাইরাসের নতুন রূপান্তরিত স্ট্রেইন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি সংক্রামক হতে পারে। জনগণকে এসব এলাকা থেকে বাইরে ভ্রমণে না যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের অধিক সংক্রামক নতুন একটি ধরন দেখা দেওয়ার পর সব ফ্লাইট চলাচল বন্ধের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। সৌদি আরব ও কুয়েত নিজেদের দেশে ব্রিটিশ ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা   জারি করেছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা   করেছে সৌদি আরব। দেশটির স্থল ও সমুদ্রবন্দরের সব প্রবেশ পথও বন্ধ করা হয়েছে। অন্তত এক সপ্তাহ পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে। অধিক সংক্রামক নতুন ধরনের করোনাভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মতামত দিচ্ছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারও উদ্বিগ্ন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন গত সোমবার গণমাধ্যমে বলেন, দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেন মারাত্মক আকার ধারণ না করে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। প্রথম দফায় সংক্রমণকালে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের মাধ্যমেই দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়। পরে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই সতর্ক করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ মহলে যুক্তরাজ্যে নতুনভাবে সংক্রমণের বিষয় জানিয়েছেন বলে জানান তিনি। আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট বন্ধ করতে হলে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত হতে হবে। এখনো এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ফ্লাইট বন্ধ করতে গেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার রয়েছে। ফ্লাইট বন্ধ থাকলে দেশের অর্থনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইটে আগত যাত্রীদের করোনা সনদ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা জোরদার করা হয়েছে। এই রুটের যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নজর দিতে বিমানবন্দরে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর