রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদের। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যা, পুত্রবধূ ও নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বাদ মাগরিব বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মরহুম আবদুল কাদেরের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পৃথক এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। আরও শোক প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা। সহকর্মী ও সুহৃদদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিকাল ৩টায় আবদুল কাদেরের মরদেহ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আনা হয়। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের আয়োজনে সেখানে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শ্রদ্ধাঞ্জলি পর্বে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন- শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ঝুনা চৌধুরী, ত্রপা মজুমদার, আহমেদ গিয়াস, অনন্ত হিরা, চন্দন রেজা। প্রয়াতের পরিবারের সদস্যরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধানুষ্ঠানে এসে আবদুল কাদেরের নাতনি সিমরিন লুবাবা বলেন, দাদু যখনই আসতেন, আমরা খুব মজা করতাম। বাইরে গেলে দাদু আমাকে সবকিছু কিনে দিতেন। আমার দাদু আমাকে সিঙ্গার হতে বলতেন। আপনারা দোয়া করবেন, দাদার যাতে বেহেশত নসিব হয়।

রামেন্দু মজুমদার বলেন, থিয়েটারের অভিনেতা এবং সংগঠক হিসেবে আবদুল কাদের ছিলেন অপিরহার্য। দীর্ঘদিন তিনি থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নিজে আনন্দে থাকতেন, অন্যকে আনন্দে রাখতেন। ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, খুবই ভালো ও বিরল অভিনেতা ছিলেন। অসম্ভব রসবোধ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন। নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, কাদের আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। নাটক অন্তপ্রাণ অজাতশত্রু একজন মানুষ ছিলেন তিনি। শিল্পকলা একাডেমিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে বাদ মাগরিব বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ জোহর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার সেন্ট্রাল মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন অগ্নাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন আবদুল কাদের। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। চিকিৎসায় কোনো উন্নতি না হওয়াতে ২০ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন তিনি। মিরপুর ডিওএইচএসের বাসায় না নিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে এই অভিনেতাকে সরাসরি বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পর দিন ২১ ডিসেম্বর করোনা পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। মাঝে বৃহস্পতিবার অবস্থার একটু উন্নতি হলেও গতকাল সকালে মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করেন এই অভিনেতা।

সর্বশেষ খবর