শুক্রবার, ১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পরিস্থিতি ভালো হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে : প্রধানমন্ত্রী

বই বিতরণ উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিস্থিতি ভালো হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, আমরা জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর মধ্যে যদি অবস্থা ভালো হয় তাহলে খোলা হবে, যদি না হয়, আমরা খুলব না। কিন্তু আমি মনে করি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে গতকাল প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক স্তর, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের  শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। খবর বাসসের। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন কয়েকজন প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীর হাতে নতুন পাঠ্য পুস্তক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম উপস্থিত ছিলেন। আজ ১ জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বই বিতরণ শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে মোট ১২ দিন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই বিতরণ করা হবে। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আজ বই উৎসব না হলেও বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। এবার ছাপা হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি বই। প্রধানমন্ত্রী করোনাকালে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি অন্য বই পড়ার এবং শরীরচর্চা ও খেলাধুলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে নেওয়ার জন্যও অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি, বিভিন্ন ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (জুম, ম্যাসেঞ্জার, ফেসবুক গ্রুপ, ইউটিউব) ব্যবহার করে ক্লাস রেকর্ডিং করে কিশোর বাতায়ন, শিক্ষক বাতায়ন এবং ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কাজেই ঘরে বসে আমাদের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। ২০২১ শিক্ষাবর্ষে মোট ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৪১২টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রি) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হবে। তবে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধু বাংলা বইটি পাবে। এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে। অন্যদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার বইয়ের প্রচ্ছদে নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের শেষ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের বিভিন্ন স্থিরচিত্র রয়েছে।  প্রধানমন্ত্রী করোনাকালে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে পাঠানোর তথ্য উল্লেখ করেন। তিনি করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যেখানে জনসমাগম বেশি সেখানে মুখে মাস্ক পরতে হবে এবং কিছুক্ষণ পরপর হাত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এটাই করোনার ক্ষেত্রে আমাদের সুরক্ষা দেয়।

 তিনি এই শীতকালে লেবু ও কমলালেবুসহ বিভিন্ন ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, সেজন্য আমি আমাদের অভিভাবক শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সবার প্রতি অনুরোধ জানাব। আর সব সময় ঘরে বসে না থেকে যে কোনো সময়ে একটু রোদে বা খোলা বাতাসে থাকতে হবে। এটি আমাদের করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি দিতে পারে। তিনি দেশবাসীকে ইংরেজি নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছাও জানান।

সর্বশেষ খবর