সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
ইন্দোনেশিয়ার বিমান বিধ্বস্ত

সাগরে ভেসে উঠছে লাশ, ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার কাজ চলছে

প্রতিদিন ডেস্ক

সাগরে বিধ্বস্ত হওয়া ইন্দোনেশীয় যাত্রীবাহী বিমানে থাকা ৬২ যাত্রীর সবাই নিহত হয়েছেন। গত শনিবার দুপুরে শ্রীবিজয়া এয়ারের এই বোয়িং ৭৩৭-৫০০ বিমানটি জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের পরপরই সাগরে বিধ্বস্ত হয়। গতকাল সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সাগরে একের পর এক নিহত যাত্রীদের দেহাবশেষ ভেসে উঠছিল। এ সময়ের মধ্যে বিমানের নানা ধ্বংসাবশেষও উদ্ধার করা হয়।

সূত্র : রয়টার্স, আল জাজিরা। গতকাল ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানটির সম্ভাব্য ফ্লাইট রেকর্ডার থেকে ছড়িয়ে পড়া সিগন্যাল শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। নৌবাহিনীর ডুবুরিসহ অন্তত ১০টি জাহাজ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া অনেক মৎস্যজীবী বিমানটি বিধ্বস্ত হতে দেখেছেন এবং তারা বিমানটির কিছু ধ্বংসাবশেষ, একটি চাকা ও মানবদেহের অংশ উদ্ধারকারী দলগুলোর কাছে হস্তান্তর করেছেন।

এদিকে ইন্দোনেশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী বুদি কারিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বিমানবন্দর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লাকি দ্বীপের কাছে সাগরে বিধ্বস্ত হয় শ্রীবিজয়া উড়োজাহাজটি। প্রবল বৃষ্টির কারণে উড়োজাহাজটি নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা পর রওনা হয়েছিল। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর একটি জাহাজের ওপর অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান বাগুস পুরহিতো বলেন, ‘দুটি পয়েন্টে আমরা সিগন্যাল শনাক্ত করেছি। এটি ব্ল্যাক বক্স হতে পারে- আমরা তদন্ত করে দেখব।’ ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াহিউদ্দিন আরিফ আইনিউজকে জানিয়েছেন, তারা উড়োজাহাজের কাঠামোর সম্ভাব্য টুকরা পেয়েছেন যেটি প্রায় ১ মিটার লম্বা, পাশাপাশি চাকা, টায়ারের টুকরা ও মানব দেহের অঙ্গও পেয়েছেন। জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র ইউসিরি ইউনুস জানিয়েছেন, তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা থেকে দুটি ব্যাগ গ্রহণ করেছেন তারা। প্রথম ব্যাগে যাত্রীদের জিনিসপত্র ও অপর ব্যাগে মানব দেহের অঙ্গ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এসব জিনিস শনাক্ত করতে কাজ করছি আমরা।’ ইন্দোনেশিয়ার বিমান বাহিনীর চিফ অব স্টাফের সহকারী হেনরি আলফিয়ানদি জানিয়েছেন, শিগগিরই উড়োজাহাজটি খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তারা। বিভিন্ন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, জাকার্তা এয়ারপোর্ট থেকে ওড়ার পাঁচ মিনিট পর ৬২ জন যাত্রীসহ সমুদ্রে ভেঙে পড়ে বিমানটি। সরকারিভাবে ঘোষণা করা না হলেও, ঘটনার পরদিন গতকাল উপকূলে ভেসে উঠতে শুরু করেছে যাত্রীদের দেহাবশেষ থেকে শুরু করে বিমানের ভাঙা টুকরো। উদ্ধারকারী দল থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রত্যেকেরই ধারণা, সমুদ্রেই বিমানটির সলিলসমাধি ঘটেছে। বেঁচে নেই বিমানের কোনো যাত্রীই।যাত্রীদের মধ্যে ১০ জন শিশুও ছিল। কর্মকর্তারা কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির কথা স্বীকার না করলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, যোগাযোগ ছিন্ন হওয়ার আগে সেটি ১১ হাজার ফুট ওপর দিয়ে উড়ছিল। কিন্তু ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে ৩ হাজার ফুটেরও নিচে নেমে গিয়েছিল। তারপর আচমকাই সেটির সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এদিকে পন্টিয়ানাকের বিমানবন্দরে উৎকণ্ঠার মধ্যে অপেক্ষা করছেন বিমানে থাকা যাত্রীদের আত্মীয়রা। ইয়ামান জাই নামে এক ব্যক্তি নিজের এক সন্তানের ছবি দেখিয়ে জানান, ‘বিমানটিতে আমার স্ত্রী এবং তিন সন্তান ছিল। ঘটনার কিছু মুহূর্ত আগেই সন্তানদের একটি ছবিও পাঠিয়েছিল আমার স্ত্রী। তারপরই এই হৃদয়বিদারক ঘটনা।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর