মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ সরকারে বলেই দেশ স্বনির্ভর হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সরকারে বলেই দেশ স্বনির্ভর হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ দীর্ঘকাল দেশ পরিচালনার সুযোগ পাওয়ায়ই বাংলাদেশ আজ মর্যাদাপূর্ণ, স্বনির্ভর এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে উঠছে।

গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। ইংরেজি নতুন বছর ২০২১ সালে এটাই ছিল মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটা বিষয় সুস্পষ্ট হয়েছে যে, বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখছে, যা অতীতে ছিল না। বাংলাদেশের নাম বললেই ঝড়, বন্যা আর দারিদ্র্যের দেশ বলে বিশ্বে অনেকে মনে করত। তিনি বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আজকে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী যেমন উদযাপন করেছি, তেমনি সরকারে থেকেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এবং দেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি বলেন, সীমিত সম্পদ এবং বিশাল জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়েই তাঁর সরকার দেশকে আত্মমর্যাদাশীল করে গড়ে তুলতে চায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যতটুকু আছে তা নিয়েই দেশের যে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের কর্মক্ষম করে তুলব। আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে নিজেদের আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি বলেন, জাতির জনক বলেছিলেন ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’- নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করতে পারায় আজকে বিশ্বে তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আসীন হয়েছি। তিনি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে বাংলাদেশ- এই একটি সিদ্ধান্তই সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ আর পরনির্ভরশীল নয়। শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পেছনে আমাদের দেশেরই স্বনামধন্য কিছু লোক জড়িত, যেটা আমাদের দুর্ভাগ্য। তিনি বলেন, একটি ব্যাংকের সামান্য একটি এমডি পদের লোভে একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে যেটি বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে, যে পদ্মা সেতু আমাদের দক্ষিণের ২২টি জেলার মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে, সেটি বন্ধের ব্যবস্থা নিয়েছিল। যা হোক, একটি আঘাত এলে হয়তো মানুষ সচেতন হয় এবং নিজের কাজ করা শেখে। আমরা সেটাই শিখেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই আঘাতটা আসায় আমরা হতাশ না হয়ে বরং সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দিই এবং যা আজকে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশে আর একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। সব ঘরে বিদ্যুতের সেবা পৌঁছে দিয়ে প্রত্যেক ঘরে আমরা আলো জ্বালব। তিনি বলেন, জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদাগুলো তাঁর সরকার পূরণ করে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এবং সেভাবেই দেশকেও এগিয়ে নিয়ে জাতির জনকের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক দেশ স্বাধীনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে সেই যে বলেছিলেন- এই দেশের মাটি এবং মানুষ রয়েছে, তা দিয়েই তিনি দেশকে গড়ে তুলবেন- সে কথা মাথায় রেখেই তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে নতুন বছরে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন চলমান থাকার পাশাপাশি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সমাগত হওয়ায় এটিকে জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর