বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা রিমান্ডে

প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদেশে পলাতক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাকে টাকা

পাচারের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক। এর আগে গতকাল দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি ১০ নম্বর সড়কের একটি বাসা থেকে পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকাকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, পি কে হালদারের অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলার তদন্তে অবন্তিকার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এই কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে দুদক থেকে আদালতে নেওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অবন্তিকা বলেন, আমাকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছুই জানি না। অবৈধ সম্পদ আছে কিনা, এ প্রশ্নের উত্তরে অবন্তিকা বলেন, এটা দুদক জানে, আমি বলতে পারব না। অবন্তিকাকে গ্রেফতারের পর প্রথমে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে তাকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন। পরে তাকে জজ আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে এর আগে ২৮ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলে অবন্তিকা বড়াল দুদকে হাজির হননি। মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গত ৪ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক ‘সহযোগী’ শংখ ব্যাপারীকে গ্রেফতার করা হয়। দুদকের দাবি, শংখ ব্যাপারীর নামে ধানমন্ডি এলাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পি কে হালদারের টাকায় কেনা। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। এই চার কোম্পানি হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে দুদকের দাবি। এর মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদক ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করে। দুদক সূত্র জানিয়েছে, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়দের, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে আটটি কোম্পানিতে ৬৭ কোটি ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৯ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার বৈধ কোনো উৎস অনুসন্ধানে মেলেনি। পি কে হালদারকে  গ্রেফতারে এরই মধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে। তার মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর