শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ইন্টারপোলের রেড নোটিসভুক্ত দুই বাংলাদেশি মানব পাচারকারী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক অপরাধ পুলিশ সংস্থার (ইন্টারপোল) রেড নোটিসভুক্ত দুই বাংলাদেশি মানব পাচারকারী গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের একজন কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল (৩৮)। তাকে ইতালি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্যজন মাদারীপুরের শাহাদত হোসেন (২৯)। তিনি ঢাকায় ধরা পড়েছেন।

এই দুজন গত বছরের ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানব পাচারকারীদের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলার আসামি।

সিআইডি এ দুজনসহ ছয় মানব পাচারকারীকে ধরিয়ে দিতে গত বছরের নভেম্বরে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায়। এরপর ইন্টারপোল ৬ ও ২৫ নভেম্বর তাদের নামে রেড নোটিস জারি করে। যে চারজন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন তারা হলেন- মিন্টু মিয়া, স্বপন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও তানজিরুল।

ইন্টারপোলের সঙ্গে ঢাকায় কাজ করা পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি মহিউল ইসলাম তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি জানিয়েছেন।

গতকাল সিআইডি সূত্র জানায়, ইতালির কোসেঞ্জা শহরে জাফর গ্রেফতার হয়েছে। ইতালি পুলিশ জাফরকে আদালতে উপস্থাপন করার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জাফরকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে এনসিবি। ৪০ কার্যদিবসের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জাফর ইকবাল সম্পর্কে ইতালি যেসব তথ্য চেয়েছে, পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখা তা আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত করবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয় সত্যায়িত করে নথিপত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেখান থেকে নথি যাবে ইতালিতে। ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। তবে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে জাফরকে ফিরিয়ে আনা যাবে। আর শাহাদত ঢাকায় আসেন ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারির আগে গত ৮ নভেম্বর। দুবাই থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই তাকে বিমানবন্দর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। অথচ তার বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি করতে আগেই ইন্টারপোলে আবেদন করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। মাদারীপুরকেন্দ্রিক মানব পাচারকারী দলের হোতা জাফর ও শাহাদত। দুজনের বিরুদ্ধেই বিদেশে ভালো চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে প্রতারণা, মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি করা ও হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শাহাদত মাদারীপুরের নজরুল ইসলাম মোল্লা নামের এক মানব পাচারকারীর সহযোগী।

লিবিয়ার মিজদাহতে বাংলাদেশিদের হত্যা, মুক্তিপণ আদায় ও নির্যাতনের ঘটনায় সিআইডি বাদী হয়ে পল্টন ও বনানীতে ৩টি মামলা করে। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ২৩টি মামলা হয়। সিআইডি মোট ২৫টি মামলার তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। এসব মামলায় আসামি ২৯৯ জন, গ্রেফতার আছেন ১৭১ জন এবং ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ পর্যন্ত দুটি মামলায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে তারা।

সর্বশেষ খবর