শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
কুষ্টিয়ার এসপিকে হাই কোর্ট

দেশকে পুলিশি রাষ্ট্র বানাবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে উদ্দেশ করে হাই কোর্ট বলেছে, ‘পত্রপত্রিকায় যা দেখলাম, তা যদি কুষ্টিয়ার বাস্তব চিত্র হয়, তবে তা হবে জাতির জন্য ভয়ংকর। এমন যাতে মানুষের মনে না হয় যে দেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দেশকে পুলিশি রাষ্ট্র বানাবেন না। জাতি উৎকণ্ঠিত। এটা নিরসনের দায়িত্ব আপনাদের।’ গতকাল বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি  খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

হাই কোর্ট বলে, পুলিশকে কথায় নয়, কাজে পটু হতে হবে। কে কোন মতাদর্শের, কোন দলের, সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। সর্বস্তরের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব। পুলিশ কারও জন্য ভীতিকর না হয়ে তাদের কর্মকান্ডে মানুষের বন্ধু হতে হবে। এর আগে এসপির নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী আহমেদ ইশতিয়াক। আদালত ক্ষমার আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছে। একই সঙ্গে তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সাময়িক সময়ের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে এসপির দুর্ব্যবহারের সাক্ষী প্রিসাইডিং অফিসার মো. শাহজাহান আলী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কুষ্টিয়ার এসপিকেই নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত এসপিকে বলেছে, ‘আমাদের এই মনোভাব আগামী দিনের কর্মকান্ডে কতটা প্রতিফলিত হয়েছে, সেটা দেখতে চাই।’ আদালতে কুষ্টিয়ার এসপির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আহমেদ ইশতিয়াক। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি হাই কোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন এসপি এস এম তানভীর আরাফাত। আবেদনে এস এম তানভীর আরাফাত উল্লেখ করেন, তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি। তাই এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হবেন। এ ধরনের ভুল আর কখনো হবে না বলেও আবেদনে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ওই ঘটনায় নিজের অনুতপ্তের কথা জানিয়ে আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এসপি। ১৯ জানুয়ারি ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতের দুর্ব্যবহারের বিষয়টি অভিযোগ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে আসে।

ওই ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই এ অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০ জানুয়ারি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ব্যাখ্যা দিতে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে তলব করে হাই কোর্ট। ২৫ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হতে বলা হয়। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না- এই মর্মে ব্যাখ্যা চায় আদালত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর