বুধবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
সা ক্ষা ৎ কা র

আস্থার সর্বোচ্চ প্রতিদান দেব : রেজাউল করিম

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

আস্থার সর্বোচ্চ প্রতিদান দেব : রেজাউল করিম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর আস্থা রেখে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি এই আস্থার সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করব। চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন, নালা-নদী পুনরুদ্ধার এবং মাদকমুক্ত নগর গড়ব।

আজ বুধবার চসিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগর। তাই এই নগরীকে পরিকল্পিত একটি নগর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পরিকল্পনা ছাড়া একটি নগরকে এগিয়ে নেওয়া যায় না। তাই আমার অন্যতম লক্ষ্য হলো চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতা ও যানজটমুক্ত একটি সমৃদ্ধ নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশদ্বার এই বন্দর। জাতীয় আমদানি-রপ্তানির ৮৫ শতাংশ চট্টগ্রাম দিয়ে পরিচালিত হয়। স্বাভাবিক কারণে চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১২ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বমানের আন্তর্জাতিক বন্দরে পরিণত হয়েছে। এই চট্টগ্রাম অনেক দূর এগিয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের ভূমিবেষ্টিত সেভেন সিস্টার, চীনের কুনমিং শহর, নেপাল ও ভুটানের আমদানি-রপ্তানির ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার হবে চট্টগ্রাম। একই সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন তীর্থ হিসেবেও গড়ে উঠবে বৃহত্তর চট্টগ্রাম। তিনি বলেন, পূর্বসূরি সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম নগরকে এক অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তাঁর সেই উচ্চমাত্রার উন্নয়ন অব্যাহত রাখা দরকার। তাই তাঁর অনুপস্থিতিতেও উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান রাখা এবং আয়বর্ধক প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করা হবে। এর মাধ্যমে করপোরেশনকে স্বনির্ভর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।  রেজাউল করিম বলেন, নির্বাচনে আমার নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গীকারের অন্যতম হলো, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন। একই সঙ্গে দখলকৃত খাল, নালা-নদী পুনরুদ্ধার ও পানি নিষ্কাশন উপযোগী করা। এর জন্য ১০০ দিনের মধ্যে সবগুলো ত্রুটি ও প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা নির্মূলে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করব। প্রয়োজনে বিদ্যমান আইনানুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া যানজট সমস্যা নিরসন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন, চট্টগ্রামকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা, মশক নিধনে প্রতিনিয়ত ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখা এবং হোল্ডিং ট্যাক্সসহ ধার্যকৃত সব কর সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে সবগুলো সেবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হবে। বর্তমানে কিশোর গ্যাং একটি বড় সামাজিক সমস্যা। এটি এখন বড় ব্যাধি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। কিশোর গ্যাংকে এখনই সমাজ থেকে সমূলে নির্মূল করা না গেলে আগামীতে এটি জাতীয় জীবনের জন্য এক অশনিসংকেত হিসে দাঁড়াবে। তাই কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করব।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরের একটি বড় সমস্যা স্বাস্থ্যসেবা। তাই নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রথমেই প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে নগর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা হবে। এখানে গরিব-অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হবে। প্রতিটি সেবা কেন্দ্রই হবে আধুনিক ও মানসম্মত। তিনি বলেন, মাদক প্রশ্নে আমার অবস্থান জিরো টলারেন্স। মাদকসংক্রান্ত কোনো বিষয়কেই আমি প্রশ্রয় দেব না। তাই নির্বাচিত হলে আমার অন্যতম অগ্রাধিকার থাকবে মাদকমুক্ত নগর গড়া। মাদকমুক্ত নগর গড়তে পারলে সমাজ স্বাভাবিকভাবেই সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হবে।

এই মেয়র প্রার্থী বলেন, নগরবাসীর জন্য গৃহকর একটা বড় সমস্যা হিসেবে তৈরি হয়। এ ব্যাপারে আমার বক্তব্য স্পষ্ট, সরকার নির্ধারিত কর ছাড়া আর কোনো কর থাকবে না। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে গৃহসহ অন্যান্য সব প্রকার করকে সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরে জনসংখ্যার তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশ অপ্রতুল। তাই সবাইকে শিক্ষার আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ গ্রহণ করব। তিনি বলেন, নগরে মা-বোনরা নানা রকম নাগরিক সমস্যার মুখোমুখি হন। এ সমস্যা নিরসন হওয়া জরুরি। তাই মা-বোনদের জন্য পৃথক পরিবহন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর