অপহরণ, মুক্তিপণ, চাঁদাবাজি এবং ভয়ভীতি দেখাতে নারী সদস্যদের ব্যবহার করত ওরা। মূলত নারী সদস্যদের ব্যবহার করেই এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ চালিয়ে আসছে। তারা প্রথমে ভিকটিমকে অপহরণ করে পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে। ২-৩ লাখ টাকা পেলেই তারা ভিকটিমকে ছেড়ে দেয়। তবে ভিকটিমকে ছাড়ার আগে চক্রটির নারী সদস্যদের দিয়ে অশ্লীল ছবি তুলে রাখে। পরে ভিকটিম সম্মান রক্ষায় পুলিশের কাছে কিছু বলে না। এসব কথা বলছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের একটি দল। তারা হলেন- মো. সাদেকুল ইসলাম, মো. ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, মো. কুতুব উদ্দিন, মো. মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি।
হাফিজ আক্তার বলেন, শুক্রবার উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক ব্যক্তি। এ সময় মাইক্রোবাসে অপহরণ চক্রের ৪-৫ জন সদস্য তার কাছ আসে। তারা ওই ব্যক্তিকে কৌশলে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে অপহরণকারীরা ভিকটিমের স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। টাকা পাওয়ার পর চক্রটির সদস্যরা ভিকটিমকে উত্তরার ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি উত্তর বিভাগের একটি দল এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করেছে। এর আগেও এই চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অপহরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। নানা কৌশল অবলম্বন করায় ভিকটিমরা ভয়ে পুলিশের কাছে আসত না। চক্রটি নারী সদস্যদের দ্বারা অপহৃত ব্যক্তিদের অশ্লীল ছবি তুলে রাখে। হুমকি দেয়, যদি পুলিশের কাছে যায়, তাহলে অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ফলে ভুক্তভোগীরা সামাজিক মর্যাদা হানির ভয়ে আর পুলিশের শরণাপন্ন হন না।
ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, কেউ যদি এই চক্রটির মাধ্যমে অপহৃত হয়ে থাকেন, তবে গোপনে আমাদের কাছে আসেন। আমরা সক্রিয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের পর এখন পর্যন্ত চারজন ভিকটিম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।