সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিএনপি এমপির বক্তব্যে সংসদে হইচই

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে গতকাল বিএনপি দলীয় এমপি জি এম সিরাজ বলেছেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আট বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ জিয়ার নাম উল্লেখ না করায় তিনি ধন্যবাদ জানাতে পারছেন না। এ সময় সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা সংসদে হইচই শুরু করেন। তারা বলতে থাকেন, ‘পাঠক’, ‘পাঠক’। এর মধ্যেও তিনি বক্তব্য অব্যাহত রেখে বলেন, বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে, ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, হত্যা, ধর্ষণ সমাজের স্তরে স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারের মদদপুষ্টরা এসব করছে। তার বক্তব্যের পুরো সময় থেমে থেমে হইচই চলতে থাকে। এক পর্যায়ে অধিবেশনের সভাপতি ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া সরকারদলীয় সদস্যদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জি এম সিরাজ যা বলছেন, তাকে বলতে দেন, প্রয়োজন হলে পড়ে আপনারাও বলবেন। জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনাকালে এ ঘটনা দৃশ্যমান হয়। জি এম সিরাজ আরও বলেন, ব্যাংক, মন্ত্রণালয় কোথায় নেই দুর্নীতি? শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতিবাজরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি তুলে ধরে তিনি বলেন, জি কে শামীম, সাহেদরা করোনার ভুয়া সনদ বিক্রি করে বিশ্বে বাংলাদেশকে হেয় করেছে। লুটপাটকারীরা বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার করছে। বাচ্চু থেকে পি কে হালদার পর্যন্ত সবাই সরকারের মদদপুষ্ট। গত ১০ বছরে দেশের ১০ লাখ  কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কুয়েতে কারাদন্ড হয়েছে একজন সংসদ সদস্যের। তিনি এই সংসদকে কলঙ্কিত করেছেন, দেশ কলঙ্কিত হয়েছে। এ সময় জি এম সিরাজ সরকারের প্রশংসা করে বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমনে আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করব। নারী উন্নয়ন, শিক্ষা খাতের উন্নয়নে আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করছি, ধন্যবাদ দিতে চাই। সরকারদলীয় সদস্যদের হইচই-এর জবাবে তিনি বলেন, আমরা সংসদে কম সদস্য হলেও জনগণ আমাদের বক্তব্য শুনতে চায়, স্পিকার শুনতে চান, প্রধানমন্ত্রী শুনতে চান। কিন্তু আমার সহকর্মী সদস্যরা হইচই করছেন, এটা ব্যাড প্র্যাকটিস। এ সংসদে আমি নতুন নই। আগেও এসেছি। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগের আমলেও সংসদে ছিলাম। তখন এরকম দেখিনি, এখন বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। জি এম সিরাজ তার বক্তব্য শেষ করার পর ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে আপনার দুটি কথা আমি পরে শুনে দেখব, এক্সপাঞ্চ করার প্রয়োজন হলে করব। আপনি গণতন্ত্রের কথা বলছেন, এ সংসদে আমার গায়ে আপনাদের দলের সদস্যরা থু-থু ছিটিয়েছিল। আমি তখন আওয়ামী লীগ করতাম না, আমি জাতীয় পার্টি করতাম। গণতন্ত্রের কথা বললে আপনাকেও গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলতে হবে। রাষ্ট্রপতির বিষয়ে সম্মান রেখে কথা বলতে হবে।

সর্বশেষ খবর