মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
কী হবে রোহিঙ্গা ফেরতের

বড় ধরনের হোঁচট প্রত্যাবাসনে

শমসের মবিন চৌধুরী

মাহমুদ আজহার

বড় ধরনের হোঁচট প্রত্যাবাসনে

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মেজর (অব.) শমসের মবিন চৌধুরী বীরবিক্রম বলেছেন, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করেছে। সেখানে সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে নির্বাহী বিভাগ, বিচার ও আইন বিভাগ। তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিধনের মূল হোতা। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সব ক্ষমতা এ সেনাপ্রধানের হাতে। আমি মনে করি, এ অবস্থায় রোহিঙ্গা  প্রত্যাবাসনের বিষয়টা বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছে। দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আদৌ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরানো যাবে কিনা তা নিয়েও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আলাপচারিতায় সাবেক এ কূটনীতিক বলেন, যে সেনা কর্মকর্তা ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নিধনে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন, তার কাছে আমরা কীভাবে আশা করতে পারি, তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। আমি মনে করি, এ বিষয়টি আমাদের জন্য আরও জটিল হয়ে গেল। এটা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। সাধারণত মিয়ানমারে সামরিক শাসক একবার ক্ষমতায় বসলে তারা ছাড়তে চায় না। প্রায় ৪০ বছর মিয়ানমার সামরিক শাসকদের হাতেই ছিল। এক্ষেত্রে আপাতত অগ্রগতি হওয়ার কোনো আলামত নেই।

বিএনপির সাবেক এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ে যৌথ পরামর্শ সভা হওয়ার কথা ছিল। তা স্থগিত হয়ে গেছে। এর ফলে অচিরেই রোহিঙ্গা ইস্যুর কোনো অগ্রগতি হবে না। আমি মনে করি, মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে যে অভিযোগে আটক করা হয়েছে, এটা একটি অজুহাত। এ জন্য তাকে গ্রেফতার করতে পারে না। কিন্তু মিয়ানমারের সংবিধানে আছে, যে কোনো সময় তারা ক্ষমতা দখল করতে পারেন। এটা ওই ধরনের সংবিধান। যা পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নেই।

মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শক্ত বিবৃতি দেওয়া উচিত ছিল বলেও দাবি করেন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার ইস্যুতে আমাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শক্ত বিবৃতি দেওয়া উচিত ছিল। হঠাৎ করে সামরিক সরকার ক্ষমতায় বসে যাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। এটা তাদের সংবিধানে হয়তো রয়েছে, তারা যে কোনো সময় ক্ষমতা নিতে পারেন। কিন্তু এটা অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি।’ তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকার পরও ভারত শক্ত প্রতিবাদ করেছে। তারা মিয়ানমানের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নও শক্ত ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে। আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও শক্ত ভাষায় হওয়া উচিত ছিল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার জন্য মিয়ানমারের বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি কঠোর ভাষায় প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিত। বিবৃতিতে বলা উচিত, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ানমারের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর