অর্থ পাচার মামলায় বিদ্যমান আইনে সাজার পরিমাণ অনেক কম মন্তব্য করে হাই কোর্ট বলেছে, অর্থ পাচারকারীদের সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন করা দরকার। বুধবার বিসমিল্লাহ গ্রুপের অর্থ পাচার মামলার এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানির সময় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করে।
আদালত বলে, আইনে (মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২) যে সাজার পরিমাণ দেওয়া আছে তা অনেক কম। সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন করা উচিত। লঘুদন্ড দিয়ে এ ধরনের অর্থ পাচারের মতো দুর্নীতির অপরাধ রোধ করা যাবে না। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। চট্টগ্রামের বিসমিল্লাহ গ্রুপের অর্থ পাচারের এক মামলায় কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাবিবসহ নয়জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দেয় ঢাকার বিশেষ আদালত। একই সঙ্গে ৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার অর্থদন্ড দেওয়া হয়। মামলার আরেক আসামি জনতা ব্যাংক এলিফ্যান্ট রোড শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার এস এম শোয়েব উল কবিরের ১০ বছর সাজা হয়। রায়ের সময় পলাতক থাকলেও পরে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। এরপর তিনি কারাগার থেকে সাজার বিরুদ্ধে আপিল এবং জামিনের প্রার্থনা করেন। গতকাল তার জামিন আবেদনের শুনানিকালেই আদালত এ মন্তব্য করে। শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, ‘অর্থ পাচারের ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন এই ব্যাংক কর্মকর্তা। তাকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের সাজা দিয়েছে।’ তখন আদালত জানতে চায়, ‘এ আইনে সর্বোচ্চ সাজার পরিমাণ কত?’ তখন দুদকের কৌঁসুলি বলেন, ‘সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছর।’ এ পর্যায়ে আদালত বলে, ‘১২ বছর সাজা, সেখান থেকে আবার দেওয়া হয়েছে ১০ বছর। এ জন্য আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ যাবজ্জীবন করা উচিত।’ দুদকের মামলাসূত্রে জানা যায়, ব্যাংকিং খাতের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসে বিসমিল্লাহ গ্রুপের। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১২টি মামলায় অর্ধশত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এরই এক মামলায় এ আসামিদের সাজা হয়।