রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

দেশের ১০০৫ কেন্দ্রে আজ টিকাদান শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ১০০৫ কেন্দ্রে আজ টিকাদান শুরু

ঢাকা মেডিকেলে প্রস্তুত টিকা কেন্দ্র -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকাসহ সারা দেশের ১ হাজার ৫টি কেন্দ্রে আজ করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম একযোগে শুরু হবে। টিকা নিতে ইতিমধ্যে ৩ লাখ ২৮ হাজার জন নিবন্ধন করেছেন। কার্যক্রমের প্রথম দিনই টিকা নেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ ছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য, সচিব ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ টিকা নেবেন। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, ‘অনেক দেশের আগে আমরা টিকা জোগাড় করতে পেরেছি। আশা করছি সুষ্ঠুভাবে কাজটা সম্পন্ন করতে পারব। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। ঢাকার মোট ৫০টি হাসপাতালে ২০৪টি টিম কাজ করবে। ঢাকার বাইরে সারা দেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে কাজ করবে ২ হাজার ১৯৬টি টিম। আমাদের সর্বমোট ১ হাজার পাঁচটি হাসপাতালে ২ হাজার ৪০০ টিম কাজ করবে। আমাদের টিম প্রস্তুত আছে ৭ হাজার ৩৪৪টি। আপাতত ২ হাজার ৪০০ টিম দিয়ে আমরা শুরু করছি।’ ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, ‘আজ সকাল ১০টায় শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা নেবেন। এর আগে তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে অনলাইনে সারা দেশের কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলবেন। আজ (গতকাল) দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন। সেসব কেন্দ্র ঘুরে দেখা হয়েছে সব হাসপাতালের প্রস্তুতি ভালো। আশা করি কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই টিকার কার্যক্রম শুরু করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেবেন। এ ছাড়া এখানে টিকা নেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে টিকা নেবেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট হাসপাতালে টিকা নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম টিকা নেবেন শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা নিজেরা টিকা নেবেন এবং মানুষকে উৎসাহিত করবেন। আজ (গতকাল) রাতের মধ্যে সবাই কেন্দ্রের নামসহ খুদে বার্তার মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট দিন যেতে না পারলেও পরে গিয়ে টিকা নিতে পারবেন। টিকা নেওয়াটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। প্রথম ধাপের টিকা দিতে কত সময় লাগবে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।’

টিকা সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে মহাপরিচালক বলেন, ‘টিকা সংরক্ষণে কোল্ড চেইন সঠিকভাবে মানা হচ্ছে। মাইনাস ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উপজেলা পর্যন্ত সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।’ কারা টিকা নিতে পারবেন না এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘১৮ বছরের নিচে, গর্ভবতী, শিশু বুকের দুধ খায় এমন মা, যাদের করোনা ইনফেকশন আছে তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে টিকা দেওয়া যাবে না। সতর্কতার অংশ হিসেবে যারা গুরুতর অসুস্থ ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাদের এখন টিকা নেওয়া যাবে না। যাদের ওষুধে অ্যালার্জি আছে তাদের এ মুহূর্তে টিকা দেওয়া হবে না। টিকা কার্যক্রম কিছু দিন চলার পর আমাদের পর্যবেক্ষণ এবং বৈজ্ঞানিক তথ্যের প্রাপ্যতার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে আপডেট করব। বাংলাদেশে এখন তিনটি ব্যাচের টিকা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ব্যাচের টিকার মেয়াদ এপ্রিলে ও একটি ব্যাচের টিকার মেয়াদ জুনে শেষ হবে।’ টিকার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রস্তুতি ‘এ’ গ্রেডের বলে দাবি করেন মহাপরিচালক। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় টিকা পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শতভাগ উপজেলায় টিকা দেওয়া হবে। আইসিটি মন্ত্রণালয় যখন চূড়ান্ত করবে তখন সুরক্ষা অ্যাপ প্লে স্টোরে আসবে।’ ২৭ জানুয়ারি উদ্বোধনের ১০ দিন পর দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর