সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

কোটিপতি প্রার্থীর ছড়াছড়ি

পৌর মেয়র প্রার্থীদের হলফনামায় অধিকাংশই ব্যবসায়ী, স্বশিক্ষিত থেকে এমএ পাস রয়েছেন

গোলাম রাব্বানী

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপের ৫৬টি পৌরসভায় নির্বাচন। এবারেও আওয়ামী লীগ-বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হবে। এ ধাপে কোটিপতি প্রার্থীর ছড়াছড়ি। অনেক মেয়র প্রার্থীর রয়েছে অঢেল সম্পদ। আবার কিছু প্রার্থীর নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় থাকলেও তা নির্বাচনী হলফনামায় দেখাননি।

এ ধাপের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী। শিক্ষাগত যোগ্যতায় ‘স্বশিক্ষিত’ ও ‘সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ থেকে বিএ পাস প্রার্থীও রয়েছেন। সম্পদ বেশি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের। আর মামলা বেশি বিএনপির প্রার্থীদের। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মেয়র প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে নির্বাচন কমিশন অনেক প্রার্থীর হলফনামা প্রকাশ করেনি। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি এসএসসি পাস। পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সম্মানী ভাতা ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, অন্যান্য আয় ৪০ লাখ টাকা। তার কাছে নগদ টাকা রয়েছে ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৩৮ টাকা। ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৫৩৮ টাকা। ৪৭ লাখ টাকা দামের গাড়ি রয়েছে। স্ত্রীর নামে সোনা রয়েছে ৩০ ভরি। ব্যবসায়ী মূলধন রয়েছে ২৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০০ টাকা। কৃষিজমি রয়েছে ৫২ লাখ ৪৮ হাজার ৬০০ টাকার। অকৃষি জমি রয়েছে ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকার। ১টি দোকান রয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার, ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি বাড়ি রয়েছে। ৫০ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে। তার নামে দুইটি মামলা চলমান রয়েছে। ১০ মামলা থেকে খালাসও পেয়েছেন। এ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী এহেসান কুফিয়া। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী হলেও কোনো বার্ষিক আয় দেখাননি। তার কাছে নগদ টাকা রয়েছে ৮০ হাজার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৬ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে সোনা রয়েছে ৩০ ভরি।  এ পৌরসভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মো. জমির উদ্দিন। শিক্ষাগত যোগ্যতা অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। কৃষিখাত থেকে তার বার্ষিক আয় দেড় লাখ টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ৮০ হাজার এবং ব্যাংকে জমা রয়েছে ৫ হাজার টাকা। কৃষিজমি রয়েছে ৫৮ শতাংশ, অকৃষিজমি ৩ শতাংশ, ১০০০ বর্গফুটের একতলা দালান রয়েছে একটি। এছাড়া ৩ শতাংশ জমি রয়েছে। এদিকে এ জেলার করিমগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মুসলেহ উদ্দিন। তিনি স্বশিক্ষিত। পেশায় ব্যবসায়ী। কৃষিখাত থেকে তার আয় ৪০ হাজার ৬৪০ টাকা। ব্যবসা থেকে তার আয় ৫ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা এবং নির্ভরশীলদের আয় ২ লাখ টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৫ লাখ এবং স্ত্রীর নামে জমা ৪ লাখ ৭৩ হাজার। কৃষিজমি রয়েছে ৪.৪৯ একর, স্ত্রীর নামে ৬৮.৭৫ শতাংশ। এর মূল্য ৩৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা। অকৃষিজমি রয়েছে ১৪ শতাংশ। স্ত্রীর নামে ৪ শতাংশ, এরমূল্য ৯৭ লাখ ২১ হাজার ৭৫০ টাকা। নিজের নামে রয়েছে টিনশেড বাড়ি একটি। তবে ইসির ওয়েবসাইটে এই পৌরসভার বিএনপির মেয়র প্রার্থী হলফনামা নেই। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মু. মাহাবুবুল আলম। তিনি বিএ পাস। পেশা গৃহাস্থী। বাড়ি ভাড়া-দোকান ভাড়া থেকে তার আয় ৬০ হাজার ৪১১ টাকা। শেয়ার সঞ্চপত্র/ব্যাংক আমানত থেকে আয় ৫০ হাজার ৬৫৩ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমা রয়েছে ২০ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৪ টাকা। ১২ লাখ ২৫ হাজার টাকার একটি গাড়ি আছে। অকৃষিজমি রয়েছে ১ লাখ টাকার। ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকার মূল্যের দালান, আবাসিক/ব্যণিজ্যিক রয়েছে। ৩৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। এ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী মাহাবুবুল আলম চৌধুরী। তিনি এসএসসি পাস। পেশা ব্যবসা। ব্যবসা থেকে তার আয় ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। নগদ রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২ ভরি  সোনা রয়েছে নিজের নামে। এ পৌরসভায় ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী ফারুক বাহাদুর। তিনি স্বশিক্ষিত। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। ব্যবসা থেকে তার আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তার কাছে নগদ রয়েছে ১২ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার ৮৪৩ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫০ ভরি সোনা। যৌথ মালিকানায় ৯ শতাংশ জমি রয়েছে। এ পৌরসভায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির মেয়র প্রার্থী আইনুল কবির। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। কৃষি থেকে তার আয় ৫২ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আয় ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা। নগদ ও ব্যাংকে রয়েছে ৪৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩১ লাখ ৮১ হাজার। সোনা রয়েছে ২০ ভরি। যৌথ মালিকানায় কৃষি, অকৃষি ও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।

সর্বশেষ খবর